অবৈধভাবে ভারতীয় অস্ত্র এনে দেশে বিক্রি, গ্রেপ্তার পাঁচ

Looks like you've blocked notifications!
অবৈধভাবে অস্ত্র ও গুলি বিক্রির দায়ে পাঁচ ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ। ছবি : ফোকাস বাংলা

রাজধানীতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে অস্ত্র-গুলি ও প্রাইভেটকারসহ পাঁচ অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ। গতকাল বুধবার ধারাবাহিক অভিযানে রাজধানীর মিরপুর, দারুসসালাম ও গাবতলী এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।

গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা হলেন আকুল হোসেন, ইলিয়াস হোসেন, আব্দুল আজিম, ফারুক হোসেন ও ফজলুর রহমান। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে আটটি বিদেশি পিস্তল, আটটি গুলি, ১৬টি ম্যাগাজিন ও একটি প্রাইভেটকার উদ্ধার করা হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, সম্প্রতি গুলশানের গোয়েন্দা বিভাগ বিভিন্ন অপরাধীদের কাছ থেকে বেশ কয়েকটি অবৈধ অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করেছে। সে সসব ঘটনায় করা মামলাগুলো তদন্তকালে জানা যায়, অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবসায়ীর একটি সংঘবদ্ধ গ্রুপ দেশের সীমান্তবর্তী যশোর জেলার বেনাপোল থেকে অস্ত্র ও গুলি সংগ্রহ করে। পরে তা সারা দেশে অপরাধীদের নিকট সরবরাহ করছে।

‘বেনাপোল থেকে কে বা কারা অবৈধ অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তা জানার জন্য গোয়েন্দা দল কাজ করা শুরু করে। পরে গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্য-প্রযুক্তি বিশ্লেষণ করে জানা যায়, আন্তর্জাতিক অস্ত্র কেনা-বেচা দলের সদস্যরা বেশ কিছু অস্ত্র ও গুলি নিয়ে অপরাধীদের নিকট বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে প্রাইভেটকারে করে গাবতলী বাসস্ট্যান্ড হয়ে ঢাকায় ঢুকবে। প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল বুধবার রাতে গুলশান বিভাগের একাধিক টিম দারুস সালাম থানা এলাকায় অবস্থান নেয়।’

এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, রাত ৩টার দিকে একটি সিলভার রংয়ের প্রাইভেটকার গাবতলী ব্রিজের ইউলুপ দিয়ে সন্দেহজনকভাবে দ্রুত গতিতে উত্তর দিকে যেতে থাকে। পরে দিয়াবাড়ী এলাকায় অবস্থানরত টিমকে বেতার মারফত রাস্তায় বেরিকেড দিতে বলা হয় এবং অন্য টিমগুলো প্রাইভেটকারটির পিছু ধাওয়া করতে থাকে। ডিবির সদস্যরা স্থানীয় জনগণের সহায়তায় রাস্তায় চলাচলরত গাড়ি দিয়ে দারুস সালাম থানার বেড়িবাঁধ বড় বাজার এলাকায় রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি করে। জ্যামে আটকাপড়া গাড়িটিকে স্থানীয় জনগণের সহায়তায় ডিবি পুলিশের সদস্যরা অভিযুক্তদেরসহ আটক করে।

পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানান, এই অস্ত্র ব্যাবসা চক্রের মূলহোতা আকুল নিজে বা তার বিশ্বস্ত লোকজনের মাধ্যমে বেনাপোল সীমান্ত এলাকা থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করে যশোর, খুলনা, বাগেরহাট, ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় অস্ত্র সরবরাহ করেন। তিনি ২০১৪ সাল থেকে আজ পর্যন্ত ভারতের তৈরি দুই শতাধিক অস্ত্র নিজে বিক্রি করেছে বলে তারা জানান। গ্রেপ্তাকারকৃতরা অস্ত্র চোরাচালানসহ চক্রের অন্য সদস্যরা তক্ষক প্রতারণা, সীমান্ত পিলার, সাপের বিষ, গোল্ড স্মাগলিং, প্রত্নতাত্ত্বিক মূর্তি, ইয়াবা ও মাদক আইসের ব্যবসা করে আসছে।’

‘ভারতে তৈরি এসব অবৈধ অস্ত্র ২৮ থেকে ৫০ হাজার টাকায় ক্রয় করে বাংলাদেশের বিভিন্ন পার্টির নিকট ৮০-৯০ হাজার টাকায় বিক্রয় করে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়’, যোগ করেন এ কে এম হাফিজ আক্তার।