অভিজিৎ হত্যায় আনসারুল্লাহর পাঁচ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড, ফারাবির যাবজ্জীবন
বিজ্ঞানমনস্ক লেখক ও মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ রায়কে হত্যার দায়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) পাঁচ সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড এবং একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান আজ মঙ্গলবার দুপুরে আলোচিত এই মামলার রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার সময় মামলার ছয় আসামির মধ্যে চার আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি দুজন পলাতক রয়েছেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সেনাবাহিনী থেকে বহিষ্কৃত মেজর জিয়া, আকরাম হোসেন ওরফে আবির ওরফে আদনান ওরফে হাসিবুল ওরফে আব্দুল্লাহ, আবু সিদ্দিক সোহেল, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন, আরাফাত রহমান।
এ ছাড়া উগ্রপন্থি ব্লগার শফিউর রহমান ফারাবিকে যাবজ্জীবন দিয়েছেন আদালত।
মেজর জিয়া ও আকরাম হোসেন ওরফে আবির ওরফে আদনান ওরফে হাসিবুল ওরফে আব্দুল্লাহ পলাতক রয়েছেন।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি গোলাম সরোয়ার জাকির আজ দুপুরে এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরও বলেন, বিচারক রায়ে উল্লেখ করেছেন আসামিরা সাংগঠনিকভাবে অভিন্ন উদ্দেশ্যে এই হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। তাই তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রাপ্য।
রায়ের আগে চার আসামিকে আজ সকাল ১০টার দিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে নিয়ে আসা হয়েছে।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপনের শুনানি শেষে আজকের রায়ের দিন নির্ধারণ করেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত সোয়া ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় অভিজিতের স্ত্রী বন্যাও গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় অভিজিতের বাবা অধ্যাপক অজয় রায় বাদী হয়ে ২০১৫ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি শাহবাগ থানায় মামলা করেন।
হত্যাকাণ্ডের তদন্তে পুলিশকে সহায়তা করতে ঢাকায় আসে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা-এফবিআই। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে ২০১৯ সালের ১৪ মার্চ ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম এ মামলায় ছয় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর এই আদালতে ২০১৯ সালের ১ আগস্ট ছয় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল।
এ ছাড়া এ মামলায় ১৫ জনকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে। তাঁরা হলেন সাদেক আলী ওরফে মিঠু, মোহাম্মদ তৌহিদুর রহমান ওরফে গামা, আমিনুল মল্লিক, জাফরান হাসান, জুলহাস বিশ্বাস, আবদুস সবুর ওরফে রাজু সাদ ওরফে সুজন, মইনুল হাসান শামীম ওরফে সিফাত ওরফে সামির ওরফে ইমরান, মান্না ইয়াহিয়া ওরফে মান্নান রাহি, আবুল বাশার, মুকুল রানা ওরফে শরিফুল ইসলাম ওরফে হাদী, সেলিম, হাসান, আলী ওরফে খলিল, অনিক ও অন্তু।