অর্থনীতির আকাশে কালো মেঘ নয়, আমরা দেখছি সিলভার লাইটিং : পরিকল্পনামন্ত্রী
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ব্যাংক খাতে সুশাসনের অভাব রয়েছে, এটা আমরা অস্বীকার করছি না। এ বিষয়টি নিয়ে আমরা কিন্তু বসেই নেই। সবার পরামর্শ নিয়ে আমরা কাজ করছি সংস্কারও করছি।
গত চার মাসে মূল্যস্ফীতি ধীরে ধীরে কমে এসেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যতটা আশা করেছিলাম, মূল্যস্ফীতি ততটা না কমলেও এটা এখন নিম্মমুখী। অর্থনীতির আকাশে কেউ কালো মেঘ দেখছেন, আমরা দেখছি সিলভার লাইটিং।’
আজ শনিবার রাজধানীর মহাখালী ব্র্যাক-ইন সেন্টারে ‘সংকটে অর্থনীতি : কর্মপরিকল্পনা কী হতে পারে?’ শীর্ষক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এসব কথা বলেন। সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান হাবিব মনসুর, বিশ্বব্যাংকের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রূপালী হক চৌধুরীও আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হয়েছে উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ছাত্রজীবনে অনেক দূর পর্যন্ত হেঁটে কিংবা বাইসাইকেল চালিয়ে স্কুলে গিয়েছি। এখন ছেলেমেয়েরা যার যার সামর্থ অনুযায়ী গাড়িতে চড়েই স্কুলে যায়। আমাদের ছোটকালের সময়ের জীবনযাত্রার মান আর এখনকার জীবনযাত্রার মান এক নয়। এখন সবাই উন্নত জীবনযাপন করছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতির আকাশে অনেকেই কালো মেঘ দেখতে পাচ্ছেন। এ মেঘ ধীরে ধীরে কেটে যাচ্ছে। আইন ও বিধিবিধান দ্বারাই আমাদের অর্থনীতি পরিচালিত হয়ে আসছে। আমরা পরামর্শকদের পরামর্শগুলো গ্রহণ করি এবং তা প্রয়োগেরও চেষ্টা করি।’
এম এ মান্নান বলেন, ‘অর্থনীতি অর্থমন্ত্রী চালান না, অর্থনীতি পরিকল্পনামন্ত্রী বা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর চালান না। অর্থনীতি বাই রুল বাই অর্ডার চালাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। এটাই আইন, কারণ প্রধানমন্ত্রী সরকারপ্রধান। তার থেকে এসব আইন মেনে আসে। আমি হয়তো আজ অসুস্থ বা অন্য কেউ অসুস্থ হলেন, আমি হয়তো অফিসে গেলাম না। তাই বলে কাজ তো আর পড়ে থাকবে না। আমি বলতে চাই, আমরা জেনে শুনেই অর্থনীতি চালাচ্ছি।’
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন ব্যাংক খাতের সংকট তুলে ধরে বলেন, ‘দেশের ব্যাংকের খাতের চলমান সংকট কোভিড কিংবা যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে নয়। দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা দুর্বল শাসন ও সংস্কারের অভাবে এ সংকট তৈরি হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘ব্যাংক খাতের দুর্বলতা কোভিডের কিংবা ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সৃষ্টি হয়নি। এই খাত দীর্ঘদিন ধরে দুর্বলতার মুখোমুখি। খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়ছে, বিভিন্ন সূচকে দুর্বলতা দেখা যাচ্ছে। দুর্বল সুশাসন ও সংস্কারের অভাবে এই খাত ক্রমান্বয়ে দুর্বল থেকে দুর্বলতর হচ্ছে।’
ফাহমিদা খাতুন আরও বলেন, ‘খেলাপি ঋণ বেড়ে যাচ্ছে। এটার যদি উন্নতি না হয় তাহলে ব্যাংকগুলোতে মূলধনের ঘাটতি রয়েই যাবে। খেলাপি ঋণের পরিমাণ ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে।’
খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাস্তবে যা দেখানো হচ্ছে, তার থেয়ে অনেক বেশি উল্লেখ করে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক জানান, খেলাপি ঋণের এ বিষটি আইএমএফ ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন।