অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসের বিবৃতি চটজলদি হয়েছে : তথ্যমন্ত্রী

Looks like you've blocked notifications!
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ছবি : ফোকাস বাংলা

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসায় হামলার ঘটনায় বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়রসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিচার দাবি করে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন একটি বিবৃতি দিয়েছে। প্রশাসনে কর্মরতদের দেওয়া সেই বিবৃতি ‘চটজলদি’ হয়েছে বলে মনে করেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এটি একটি স্থানীয় ঘটনা ও বিচ্ছিন্ন বিষয়। এর আগেও অনেক মেয়রের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এটিই প্রথম নয়, বহু মেয়রের বিরুদ্ধে আগেও মামলা হয়েছে। তদন্তে প্রকৃত বিষয়টি বেরিয়ে আসবে

আজ রোববার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।

এ সময় অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘বরিশালের বিষয়টি একান্তই স্থানীয়। সেখানে তড়িৎ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তবে বিষয়টি তদন্তাধীন। তদন্তে বেরিয়ে আসবে আসলে কী ঘটনা ঘটেছিল। তার আগে আসলে বেশি কিছু বলার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না।’ 

প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের দেওয়া বিবৃতি নিয়ে প্রশাসন ও সরকারের মাঝে কোনো সংকট তৈরি হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, ‘আমাদরে মাঝে অবশ্যই কোনো সংকট নেই। তবে অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতিটা চটজলদি হয়েছে।’

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি বলেছেন, সরকারের পায়ের তলার মাটি সরে গেছে। এই বক্তব্যের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের শেকড় অনেক গভীরে। জনগণের সমর্থন নিয়ে ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা সরকার গঠন করেন। তারপর দুটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নির্বাচিত হয়েই সরকার গঠন করে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিয়ে বিরোধীদলের আসনেও বসতে পারেনি। আসলে পায়ের তলার মাটি বিএনপির সরে গেছে। তাদের পায়ের তলার মাটি সরে গেছে বিধায় খালি কলসি বেশি বাজে।

গত বুধবার রাতে উপজেলা পরিষদ চত্বরে ব্যানার খোলাকে কেন্দ্র করে ইউএনওর বাসভবনে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বরিশাল মেয়রকে প্রধান আসামি করে একটি মামলাও হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার ইউএনওর বাসভবনে হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দেয় প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।

এর আগে সংগঠনটির সভাপতি ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব কবির বিন আনোয়ারের সভাপতিত্বে এ সংক্রান্ত বিষয়ে সংগঠনের কার্যনির্বাহী পরিষদের জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “বরিশাল সদরের ইউএনওর বাসভবনে সংঘটিত ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা শেষে সিদ্ধান্ত হয় যে, ‘আইনের মাধ্যমেই দুর্বৃত্তদের মোকাবিলা করা হবে’ এবং ‘আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে’।”

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘বরিশালের ঘটনাবলী বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, সরকারি কর্তব্য পালন করতে গিয়ে একজন নির্বাহী অফিসার কীভাবে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তদের দ্বারা হেনস্থা হয়েছেন। তাঁর বাসায় হামলা করা হয় যেখানে তাঁর করোনাআক্রান্ত অসুস্থ পিতা-মাতা উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের উপস্থিতিতেই উক্ত কর্মকর্তাকে গালিগালাজ করা হয়েছে, তাঁর বাড়ির গেট ভেঙে প্রবেশ করা হয়েছে, আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি ব্যবহার করা হয়েছে, তাঁর চামড়া তুলে নেওয়ার জন্য প্রকাশ্যে শ্লোগান দিয়ে মিছিল করা হয়েছে। মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ ও তাঁর দুর্বৃত্ত বাহিনী সিটি করপোরেশনের কর্মচারীদের দিয়ে নানা প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে এবং সমস্ত জেলায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।’

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন মনে করে, বরিশালের মেয়র, যাঁর অত্যাচারে সমগ্র বরিশালবাসী অত্যন্ত অতিষ্ঠ, সেই সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর হুকুমেই এই ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। অতএব, বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন অবিলম্বে তাঁর গ্রেপ্তার দাবি করছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অঙ্গীকার ব্যক্ত করছে।’