খন্দকার মাহবুব হোসেনের জানাজা সম্পন্ন

আইন অঙ্গনের উজ্জ্বল নক্ষত্র ঝরে পড়েছে : প্রধান বিচারপতি

Looks like you've blocked notifications!
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে খন্দকার মাহবুব হোসেনের জানাজা। ছবি : সংগৃহীত

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেনের মৃত্যুতে আইন অঙ্গনের উজ্জ্বল নক্ষত্র ঝরে পড়েছে।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে সমিতির সাবেক সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেনের সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে প্রধান বিচারপতি একথা বলেন। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে নয়াপল্টনে এবং বেলা ৩টা ২০ মিনিটের দিকে সুপ্রিম কোর্টে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

জানাজায় প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীসহ আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল এবং আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। জানাজা শেষে প্রধান বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে মরহুমের কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

খন্দকার মাহবুব হোসেনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সোমবার দ্বিতীয়ার্ধে সুপ্রিম কোর্ট বসবে না বলে জানাজা অনুষ্ঠানে জানিয়ে দেন প্রধান বিচারপতি।

নয়াপল্টনে জানাজা

রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রোববার বেলা সোয়া ১১টায় তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ছাপড়া মসজিদে। মোট পাঁচটি স্থানে জানাজা শেষে তাকে আজিমপুরে কবরস্থানে দাফন করা হবে। 

জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, বরকত উল্লাহ বুলু, অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আযম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, আমান উল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবী, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, কেন্দ্রীয় নেতা কাজী রওনকুল ইসলাম টিপু, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির, যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুন হাসান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না, সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী ও সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, শ্রমিক দলের মাহবুব আহমেদ বাদল প্রমুখ।

অন্য দলের মধ্যে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাপগা) বীরমুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর রহমান, যুব জাগপার মীর আমির হোসেন আমু, ভাসানী অনুসারী পরিষদের হাবিবুর রহমান রিজু, এনপিপির মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, ১২ দলীয় জোটের নেতাদের মধ্যে লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান প্রমুখ।

গতকাল শনিবার রাত ১০টা ৪৫ মিনিটের দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান খন্দকার মাহবুব হোসেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।

অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেনের জন্ম ১৯৩৮ সালের ২০ মার্চ। তার পৈতৃক বাড়ি বরগুনার বামনা উপজেলায়। তিনি ১৯৬৭ সালের ৩১ জানুয়ারি আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ওই বছরের ২০ অক্টোবর হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।

১৯৭৩ সালে দালাল আইনে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত আদালতের প্রধান কৌঁসুলি ছিলেন খন্দকার মাহবুব হোসেন। তিনি চার দফায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ছিলেন। বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দুবার দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পক্ষে আদালতে লড়তেন মাহবুব হোসেন।

এদিকে সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। তিনি মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। এছাড়া শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও।