আইসিটি মামলায় রিমান্ডে ইতালিফেরত যুবক
কিশোরগঞ্জে পুলিশের বিরুদ্ধে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবির ভিডিও করায় শেখ হোসাইন মো. ইকবাল নামের ইতালিফেরত এক যুবককে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে (আইসিটি) করা মামলায় আটকের পর আট দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। ৪ নম্বর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তাছলিমা আক্তার গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এ আদেশ দেন।
এর আগে মিঠামইন থানায় আইসিটি আইনে করা মামলায় গত সোমবার পুলিশ ওই যুবককে আটক করে। রাষ্ট্রপক্ষে আদালতের উপপরিদর্শক (সিএসআই) আমিনুল ইসলাম আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। সিএসআই আমিনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে মিঠামইন থানার এসআই নজরুল ইসলাম গত রোববার বাদী হয়ে মো. ইকবাল ও শেখ বাবু আহমেদসহ অজ্ঞাতনামা তিন থেকে চারজনের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা করেন। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, মিঠামইনের ঘাগড়া গ্রামের শেখ হোসাইন মো. ইকবাল গত ৭ মার্চ ইতালি থেকে দেশে ফেরেন। কিন্তু হোম কোয়ারেন্টিনে না থেকে তিনি অবাধে চলাফেরা করতে থাকেন। বিষয়টি স্থানীয় লোকজন পুলিশকে জানালে গত ১৩ মার্চ মিঠামইন থানার এসআই নজরুল ইসলাম ও এএসআই কিরণ চন্দ্র মণ্ডল ইকবালের বাড়িতে গিয়ে না পেয়ে তাঁর স্ত্রীর মাধ্যমে খবর পাঠান। স্ত্রীর ফোন করার পর ইকবাল বাড়িতে এলে পুলিশ হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার অনুরোধ করে। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে তর্ক করতে থাকেন ইকবাল। একপর্যায়ে তিনি মারমুখী হন।
মামলার এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয়, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ফেরার পর ইতালিফেরত ইকবাল ফেসবুকে ‘করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বলে পুলিশ এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে’ অভিযোগ এনে একটি ভিডিও আপলোড করেন। একই এলাকার শেখ বাবু আহমেদ নামের অপর এক ব্যক্তি এ কাজে সহযোগিতা করেছেন।
ইকবালের করা ভিডিওটি ভাইরাল হলে পুলিশের নজরে আসে। এরপর তদন্ত করে সত্যতা যাচাইয়ের পর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এম আজিজুল হককে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তদন্ত শেষে দাখিল করা প্রতিবেদনে পুলিশের চাঁদা দাবির ঘটনা মিথ্যা বলে উল্লেখ করেন সহকারী পুলিশ সুপার মো. আজিজুল হক।
এ নিয়ে জেলা পুলিশ কার্যালয়ে গত সোমবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে পুলিশ সুপার (এসপি) মাশরুকুর রহমান খালেদ শেখ হোসাইন মো. ইকবালকে আটকের কথা জানিয়ে বলেন, ‘মূলত হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার জন্য চাপ দিলে হোসাইন মো. ইকবাল ক্ষিপ্ত হয়ে ফেসবুকে পুলিশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করেন। পুলিশের ভাবমূর্তি ও কাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই এমন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড করা হয় বলে পুলিশ মনে করছে। এ কারণে পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত নেয়।’