আগামী বছর থেকে এনআইডিতে ১০ আঙুলের ছাপ দিতে হবে : ইসি

Looks like you've blocked notifications!
নির্বাচন ভবন। ছবি : সংগৃহীত

জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) যাঁদের চার আঙুলের ছাপ দেওয়া আছে, তাঁদের পুনরায় দশ আঙুলের ছাপ দিতে হবে। এই কার্যক্রমটি আগামী বছর হাতে নেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে যাঁরা স্মার্টকার্ড সংগ্রহ করার সময় দশ আঙুলের ছাপ দিয়েছেন, তাঁদের আর দিতে হবে না।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আজ শনিবার ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ের ত্রৈমাসিক সভায় এনআইডি অনুবিভাগের মহাপরিচালক একেএম হুমায়ুন কবীর এই তথ্য জানান।

একেএম হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘একটি কথা বলি, আমরা যেহেতু আগামী ভোট (জাতীয় নির্বাচন) আরও সুন্দর করতে চাই, এ কারণে আমরা ফিঙ্গার প্রিন্ট আপডেট করব। যাঁরা স্মার্টকার্ড নিয়েছেন, তাঁরা দশ আঙুলের ছাপ দিয়েছেন। যাঁরা দশ আঙুলের ছাপ দেননি, আগামী জানুয়ারি থেকে আমরা দশ আঙুলের ছাপ নেওয়ার চেষ্টা করছি। আমরা কমিশনের সঙ্গে ইতোমধ্যে আলোচনা করেছি। চলমান হালনাগাদ শেষে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের (আগামী বছরের ২ মার্চ) পরপরই এই কার্যক্রমে যাব।’ 

এ সময় একেএম হুমায়ুন কবীর কর্মকর্তাদের ভোটার তালিকা হালনাগাদের ক্ষেত্রে বেশ কিছু দিক-নির্দেশনা দেন।

একেএম হুমায়ুন কবীর বলেন, যাঁরা নতুন ভোটার, তাঁদের এসএসসি, পিএসসি, জেএসসি প্রয়োজনে জন্ম নিবন্ধন দেখে নিচ্ছি, যাতে ভুল না হয়। একটি বিষয় সতর্ক থাকতে বলব, যাঁরা বয়স্ক ব্যক্তি তাঁদের যেন সচেতনভাবে যাচাই-বাছাই করে ভোটার করা হয়। ঢাকায় নানা ধরনের মানুষ বসবাস করেন। আফ্রিকা থেকে ল্যাটিন আমেরিকার লোকজন বসবাস করেন। কাজেই তারাও ভোটার হতে চাইতে পারেন। পরিপূর্ণ তথ্য না দিলে ভোটার করবেন না।

একেএম হুমায়ুন কবীর আরও বলেন, ‘বিভিন্ন বাহিনীর চাকরিজীবী রেশন তোলার জন্য তিন-চার বছর পর একজন স্ত্রীর নাম দিয়ে থাকেন। এখন সত্যিকার যখন বিয়ে হয়, তখন যার সঙ্গে বিয়ে হয় সেই নামের সঙ্গে ওই আগের নামের মিল থাকে না। পেনশনে জটিলতা সৃষ্টি হয়। তখন সংশোধনের জন্য আসেন। আবার জন্মসনদ দুটো, তিনটা কার্যকর থাকে। আপনারা এসব ক্ষেত্রে খুব সতর্ক হবেন। যদি বয়স্ক কেউ ভোটার হন, দুটো জন্ম সনদ থাকে, তবে ধরে নেবেন-ডাল মে কুছ কালা হ্যায়। আর যদি একেবারে নতুন ভোটার হন তাহলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সনদ তো রয়েছে। সেটা ফলো করতে হবে। ওয়ারিশান সনদটা ভালো করে দেখে নিয়েন, যেন ছোট ভাই, বড় না হয়ে যান। এসব বিষয় খেয়াল রাখবেন। এমনও দেখা যায় যে, ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে, দেখা গেল সেটা ৫৯ বছরে পেয়েছেন। ৬০ বছর বয়সে চাকরি পেয়েছেন। কাজেই এনআইডিটা করে দিলে চাকরিটা তিনি করতে পারবেন কী না ৩০-৪০ বছর? বিদ্যুতের লাইন ম্যানের ক্ষেত্রেও এমন বিষয় আসে।’

মহাপরিচালক আরও বলেন, ‘আমরা প্রবাসীদের জন্য সব সময় অগ্রাধিকার দিচ্ছি। তাঁদের জন্য একটা পৃথক ডেস্ক খুলেছি। তার অর্থ এই নয়, রোহিঙ্গার দ্বিতীয় জেনারেশনের সৌদি আরব থেকে যেন এসে ভোটার হয়ে যাবে।’

কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে একেএম হুমায়ুন কবীর আরও বলেন, ‘আমাদের চারপাশে দালাল শ্রেণি আছে। প্রতিনিয়ত আপনাকে-আমাকে বিক্রি করছে। এদের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে তুলবেন না। পত্রিকায় এসেছে যে দিনাজপুরে নির্বাচন কার্যালয়ে গিয়ে কান্না করতেছে, আমাকে একটু জীবিত করে দেন। আমি মরি নাই। তখন আমরা আপনাদের সফটওয়্যার দিয়ে দিলাম, সেখান থেকে এখন সেটা ঠিক করতে পারছেন। আমরা এবার ১৫ বছর বয়স পর্যন্ত তথ্য উপাত্ত নিচ্ছি। আগামী বছর বয়স হয়তো আরও পেছনে যাব, এভাবে ফাইভ পাস করলেই হয়তো এনআইডি কার্ড দেব।’ 

ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে বৈঠকে ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা সেবা দিই। কিন্তু, গতি বাড়াতে না পারলে নাগরিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। অনেস্টি, সিনসিয়ারিটি যদি থাকে, তাহলে আমরা পারব। অতীতের চেয়ে গতি বেড়েছে, কিন্তু আরও বাড়াতে হবে।’

মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেন, ‘বর্তমানে যে হালানাগাদ করা হচ্ছে, এই ভোটার তালিকা দিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে। সুতরাং অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। কোনো ভাবেই কেউ যেন বাদ না পড়ে এবং কেউ যেন দ্বৈত ভোটার হতে না পারে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’