আগে ছিলাম ছোট কারাগারে, এখন বড় কারাগারে : প্রধানমন্ত্রী
করোনাভাইরাসের কারণে গোটা বিশ্ব স্থবির হয়ে পড়েছে। ভাইরাসটির প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। আর সেই প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আজকে যখন করোনাভাইরাসে সারা বিশ্ব স্থবির, আমিও ঘরে অনেকটা বন্দি। মাঝে মাঝে মনে হয়, ২০০৭ সালে যখন গ্রেপ্তার হয়েছিলাম, তখন একটি ছোট কারাগারে ছিলাম; এখন মনে হচ্ছে, একটা বড় কারাগারে আছি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার দেশ-বিদেশের খ্যাতিমান শিক্ষাবিদ, গবেষক এবং অ্যালামনাই সদস্যদের নিয়ে গবেষণাধর্মী ছয়টি ওয়েবিনারের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেই আয়োজনে সন্ধ্যায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে ওয়েবিনার কার্যক্রমের উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
এই আয়োজনে সরাসরি উপস্থিত না থাকতে পেরে আক্ষেপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আর যে (করোনা) কারণে আজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উৎযাপনের অনুষ্ঠানে সরাসরি উপস্থিত থাকতে পারলাম না। এটা সত্যিই আমার জন্য খুব কষ্টের, দুঃখের। আমি আশা করি যে, এ রকম অবস্থা থাকবে না।’
২০ লাখ করোনার ভ্যাকসিন উপহার দেওয়ায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। টাকায় কেনা ভ্যাকসিনও এ মাসের শেষ নাগাদ দেশে পৌঁছাবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যেই সব পরিকল্পনা নিয়ে রেখেছে সরকার। তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিন যেটা আমরা ভারত থেকে উপহারস্বরূপ পেয়েছি, সেটা এসে পৌঁছে গেছে। এ জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে আমি ধন্যবাদ জানাই। আর আমরা যেটা টাকা দিয়ে কিনেছি, সেটা ২৫ বা ২৬ ডিসেম্বরের মধ্যে এসে পৌঁছাবে। কাজেই এই ভ্যাকসিন কীভাবে দেওয়া হবে, সব ব্যাপারে সব সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছি।’
ছাত্রজীবনে রাজপথের আন্দোলনের স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সব সময় অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সব সময় অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। রাজনৈতিক অধিকার, সাংস্কৃতিক অধিকার, মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার, আমাদের সামাজিক অধিকার এবং আমাদের স্বাধীনতা অর্জন; এই প্রতিটি সংগ্রামের সূতিকাগারই হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। যে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী হতে পেরে আমি সত্যিই খুব গর্বিত।’
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে এনেছে বর্তমান সরকার। এখন তা রক্ষা করতে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের এমন আহ্বান জানিয়ে সরকার প্রধান আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘এ ক্ষেত্রেও বাতিঘর হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আর তার সেই আলো ছড়িয়ে পড়বে সারা বাংলাদেশে।’