‘আজান, ঘণ্টা, উলুধ্বনি আমাদের বিভাজিত করতে পারেনি’

Looks like you've blocked notifications!

গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, ‘ধর্মকে ব্যবহার করে কেউ যেন সাম্প্রদায়িকতা ছড়াতে না পারে। সেজন্য ধর্মের মৌলিক অমৃতবাণী ছড়িয়ে দিতে হবে। হাজার হাজার বছর ধরে মন্দিরের পাশে মসজিদ, মন্দিরের পাশে গির্জা, আজান, ঘণ্টা, উলুধ্বনি আমাদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করতে পারেনি।’

আজ রোববার রাজধানীতে বাংলাদেশ ব্রাহ্ম সমাজের মাঘোৎসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, চিত্তকে নির্মল করার আহ্বান ধারণ করতে পারলে বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে ধর্মের নামে উচ্ছৃঙ্খলতা, উগ্রতা ও সাম্প্রদায়িকতা থাকে না। সব ধর্মের মর্মবাণী এক। মত ও পথের ভিন্নতা থাকলেও গন্তব্য সবার একই। সব ধর্মাবলম্বীর উচ্ছ্বাসের শব্দ একইভাবে উচ্চারিত। বেদনার কষ্টে সবার ক্রন্দনের ভাষাও একই। নৈবেদ্য লাভের প্রচেষ্টা সবার এক। সব ধর্মগ্রন্থের মৌলিক কথাও একই। কোনো ধর্ম অপরাধের কথা বলে না, সাম্প্রদায়িকতার কথা বলে না।

সমাজ সংস্কারে রাজা রামমোহন রায়ের অবদানের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, অন্য ধর্মাবলম্বীরাও তাঁর অবদান অস্বীকার করতে পারবেন না। তিনি তাঁর দৃষ্টিকোণ থেকে সমাজ সংস্কারের জন্য যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছিলেন, ১৯০ বছরের দীর্ঘ ধারাবাহিকতায় আজ পর্যন্ত কেউ বলতে পারেনি যে তাঁর উদ্যোগ কোনোভাবে সঠিক ছিল না।

মন্ত্রী আরো বলেন, ব্রাহ্ম সমাজের সাধনা, চিন্তা, মননশীলতা যারা ধারণ করেন এবং লালন করেন তারা উদারতার সঙ্গে কাজ করছেন। এই উদারতা ছড়িয়ে দিতে হবে এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে। একইভাবে অন্য ধর্মাবলম্বীদেরও ধর্মের মৌলিক কথা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিয়ে শান্তির পৃথিবী বিনির্মাণে অবদান রাখতে হবে।

রেজাউল করিম আরো যোগ করেন, ১৯৭১ সালে ইসলামের নামে অন্য ধর্মের নারীদের ধর্ষণ, তাদের সম্পদ লুণ্ঠন, জোর করে ধর্মান্তরিত করা বা দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছিলো। কিন্তু ইসলাম সেটা সমর্থন করে না। আবার বিশ্বের কিছু অঞ্চলে সনাতন ধর্মের নাম নিয়ে কেউ কেউ উগ্রভাবে অপর ধর্মের মানুষের উপর হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে। যারা এ কাজ করে তারা সঠিকভাবে সনাতন ধর্ম বা ইসলাম ধর্ম বোঝে না। মিয়ানমারে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের একটি শ্রেণি গেরুয়া পোশাক পরেও হিংস্র দানবের মতো আচরণ করে। এরা মনুষ্যত্বের নির্যাস সঠিকভাবে জীবনে প্রবেশ করাতে পারেনি।