আদমদীঘিতে ১৪৩ টন গম নিয়ে রাতভর তুলকালাম কাণ্ড

Looks like you've blocked notifications!

বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের জন্য বরাদ্দ কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) প্রকল্পের ১৪৩ মেট্রিক টন গম নিয়ে শনিবার মধ্যরাত পর্যন্ত তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে।

স্থানীয় সাংসদ ও উপজেলা পরিষদের বরাদ্দ ওই পরিমাণ গম সান্তাহার সাইলো (কেন্দ্রীয় গম সংরক্ষণাগার) থেকে শনিবার রাতে উত্তোলন করেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।

পরে বিক্রির উদ্দেশে ছয়টি ট্রাকে করে গমগুলো স্থানীয় একটি স্বয়ংক্রিয় চালকলে রাখা হলে বিষয় জানাজানি হয়। ঘটনাটি জানার পর সান্তাহার টাউন ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করলে রাত ১২টা নাগাদ ই্উএনও ট্রাকগুলো তাঁর হেফাজতে নেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, আদমদীঘি উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদের জন্য বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য স্থানীয় সাংসদ নুরুল ইসলাম তালুকদার ও উপজেলা পরিষদের বিশেষ বরাদ্দ থেকে কাবিখা প্রকল্পের ১৪৩ মেট্রিক টন গম বরাদ্দ দেওয়া হয়। গম উত্তোলনের জন্য উপজেলা খাদ্য বিভাগ গত ২৯ ও ৩০ জুন বরাদ্দপত্র প্রদান করেন। কিন্তু বেশিরভাগ প্রকল্পের কাজ অর্ধেকেরও কম হওয়ায় গম উত্তোলন নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। এ কারণে ৩০ জুনের মধ্যে গম উত্তোলন করা সম্ভব হয়নি।

এ সুযোগে আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল্লাহ বিন রশিদকে না জানিয়ে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাহাবুবুর রহমান পিন্টু ও সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এরশাদুল হক টুলু শনিবার রাতে সান্তাহার সাইলোতে গিয়ে ছয়টি ট্রাকে ১৪৩ মেট্রিক টন গম উত্তোলন করেন। রাতে গম উত্তোলনের বিষয়টি নিয়ে এলাকায় হৈ চৈ পড়ে যায়।

এ অবস্থায় গম ভর্তি ট্রাকগুলোকে রাত ৯টার দিকে সান্তাহার শহরের বৈশাখী স্বয়ংক্রিয় চালকলে নিয়ে রাখা হয়। ঘটনা জানার পর সান্তাহার টাউন পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আনিসুর রহমান ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল ওয়াদুদ ঘটনাস্থলে যান এবং বিষয়টি ইউএনওকে অবহিত করেন। ইউএনও আবদুল্লাহ বিন রশিদ রাতেই ছয়টি গম ভর্তি ট্রাক তাঁর হেফাজতে নেন।

ইউএনও আবদুল্লাহ বিন রশিদ জানান, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাহাবুবুর রহমান পিন্টু ও সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এরশাদুল হক টুলু তাঁকে না জানিয়ে প্রকল্পের পুরো  গম উত্তোলন করেছেন।

ইউএনও বলেন, ‘প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় সব গম উত্তোলন করা সঠিক হয়নি। প্রকল্পের কাজ দেখার পর গম বরাদ্দ দেওয়া হবে। এ কারণে উত্তোলন করা গম উপজেলা প্রশাসনের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।’

আদমদীঘি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাহাবুবুর রহমান পিন্টু ও সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এরশাদুল হক টুলু জানান, ঘটনার দিন উত্তোলনের কথা ইউএনওকে জানানো না হলেও আগে জানানো হয়েছে।

তাঁরা বলেন, সাইলোতে বেশি ভিড়ের কারণে রাতে গম উত্তোলন করতে হয়েছে। এ ছাড়া বৈধ বরাদ্দপত্র নিয়ে গম উত্তোলন করা হয়েছে।

এদিকে, আদমদীঘি উপজেলার ১২টি প্রকল্পের কোনোটিতে ভাইস চেয়ারম্যান মাহাবুবুর রহমান পিন্টু ও ইউপি চেয়ারম্যান এরশাদুল হক টুলুর নাম না থাকার পরও কেন তাঁরা দুজন রাতে গম উত্তোলন করতে গিয়েছিলেন এ নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।