আদালত থেকে হঠাৎ উধাও আসামি!
রাজধানীর কদমতলী থানার তুষারধারা আবাসিক এলাকা থেকে গত ২১ মার্চ সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে ৫০ পুরিয়া (৫ গ্রাম) হেরোইনসহ গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পরদিন ২২ মার্চ তাঁকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে নেওয়া হয়। আদালত তাকে হাজতখানায় রাখার নির্দেশ দেয়। কিন্তু কৌশলে আদালত থেকে উধাও হয়ে যান তিনি। এ নিয়ে ঢাকার নিম্নআদালতে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার সিএমএম আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখা থেকে এ বিষয়ে জানা গেছে। গত মঙ্গলবার রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় এ ঘটনায় একটি মামলাও হয়েছে।
এ বিষয়ে ঢাকার অপরাধ তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ জাফর হোসেন বৃহস্পতিবার বিকেলে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, গত ২২ মার্চ এমন ঘটনা ঘটেছে। থানা কর্তৃপক্ষ আদালতে আসামি বুঝিয়ে দেওয়ার সময়ে মাদকের আসামি সাইফুল ইসলাম ৩ মিনিটের মধ্যে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করা হচ্ছে। যদি আদালতের দায়িত্বরত কোনো পুলিশ সদস্যের গাফিলতির তথ্য পাওয়া যায়, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ডিসি জাফর বলেন, এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা হয়েছে। আসামিকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে।
কদমতলী থানার পুলিশ সদস্যদের কোনো গাফিলতি থাকলে, তা ওই এলাকার দায়িত্বরত ডিসি দেখবেন বলে জানান তিনি।
এদিকে কোতোয়ালি থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) মাহমুদুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, গতকাল বুধবার আসামি পালিয়ে যাওয়ার মামলার এজাহার আদালতে এসেছে। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদ ছিদ্দিকী এজাহার গ্রহণ করে কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কিরণ মিয়াকে তদন্ত করে ৯ মে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
ঢাকার সিএমএম আদালতের কোর্ট ইনচার্জ (সিএমএম কোর্ট হাজতখানা) নাহিদ হাসান বলেন, ‘আমরা আসামি পাইনি। থানা থেকেই আসামি পালিয়েছে। আমাদের কাছে আসেনি।’
অপরদিকে আদালতের কদমতলী থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখা থেকে জানা গেছে, আসামিকে হাজতখানায় নিয়ে আসা হয়। ফিঙ্গার প্রিন্টও নেওয়া হয়। পরে দেখা যায়, আসামি নেই। সে হাজতখানা থেকে পালিয়ে যায়।
আসামি সাইফুলের বিরুদ্ধে করা মাদক মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কদমতলী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জহিরুল আলম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমি আদালতের কাছে আসামি জমা দিয়েছি। আদালত তাকে হাজতখানায় নিয়েছে। সেখানে নিয়ে তার ফিঙ্গার প্রিন্টও করা হয়েছে। এরপর অন্য আসামিদের যখন সেখানে ঢোকানো হয়, এ সুযোগে সাইফুল ইসলাম পালিয়ে যায়।’
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘সাইফুলের বিরুদ্ধে পালিয়ে যাওয়ার মামলা করা হয়েছে। আমরা তাকে খুঁজছি। ধরার চেষ্টা করছি। কিন্তু তার কোনো মোবাইল নম্বর নেই। প্রযুক্তির সুবিধা কাজে লাগিয়ে ট্রাকিং করে তার অবস্থান শনাক্ত করব, সেই সুযোগও পাচ্ছি না। তবে, আমরা তাকে ধরার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি।’