আবরার হত্যা : জিয়নের জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার চিফ এডিশনাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কায়সারুল ইসলামের আদালতে জিয়ন এই আবেদন করেন। প্রত্যাহারের আবেদনের পরে বিচারক সেই আবেদন নথিতে অন্তর্ভুক্ত করে রাখতে বলেন।
পরে দুপুরে এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) মাজহারুল ইসলাম।
জিআরও আরো বলেন, এ ছাড়া আজ সকালে এ মামলায় পলাতক চার আসামির সব সম্পত্তি ক্রোকের (জব্দ) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত এবং আগামী ৫ জানুয়ারি তাদের সম্পত্তি ক্রোক করা গেল কি না, সে সম্পর্কে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই মামলার পলাতক আসামিরা হলেন জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানীম, মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম ও মুজতবা রাফিদ।
আদালত কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, এ ছাড়া আজ এ মামলায় কারাগারে থাকা সব আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। তবে তাঁদের আদালতের এজলাসে উঠানো হয়নি।
এর আগে গত ১১ অক্টোবর আসামি মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাঁর এই জবানবন্দি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। জবানবন্দির বরাত দিয়ে দাবি করা হয়, গত ৬ অক্টোবর রাতে শেরেবাংলা হলের ২০১১ নম্বর রুমের ভেতর তাঁর সহযোগীদের আবরারকে পিটাতে দেখেছেন।
আসামি জিয়ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘নেভাল আর্কিটেকচার ও মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং’ বিভাগের ১৫তম ব্যাচের ছাত্র; পাশাপাশি তিনি বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন।
গত ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। হত্যার দুদিনের মধ্যে গত ৮ অক্টোবর মামলায় জিয়ন গ্রেপ্তার হন। পরে তাঁকেসহ ১০ আসামিকে পাঁচ দিনের রিমান্ড দেন ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াছির আহসান চৌধুরী।
গত ১৩ নভেম্বর ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার তদন্ত কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদুজ্জামান ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার অভিযোগপত্র জমা দেন।
ওই দিনই ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আবরারকে হত্যায় সরাসরি যুক্ত ছিল ১১ জন। তারাই আবরারকে কয়েক দফায় মারধর করে। বাকি ১৪ জন বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্নভাবে এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল। ঘটনার দিন রাত ১০টা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত আবরারকে পেটানো হয়।’
অভিযোগপত্রভুক্ত ২৫ আসামির মধ্যে ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২১ জনের মধ্যে ১৬ জনের নাম আবরারের বাবার করা হত্যা মামলার এজাহারে আছে।
তাঁরা হলো মেহেদী হাসান রাসেল, মো. অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মো. মেহেদী হাসান রবিন, মো. মেফতাহুল ইসলাম জিওন, মুনতাসির আলম জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, মো. মুজাহিদুর রহমান, মুহতাসিম ফুয়াদ, মো. মনিরুজ্জামান মনির, মো. আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মো. মাজেদুল ইসলাম, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা ও এ এস এম নাজমুস সাদাত। বাকি পাঁচজনের নাম তদন্তে এসেছে। তাঁরা হলেন ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মো. মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত ও এস এম মাহমুদ সেতু।