আবারও ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা চলছে : শিক্ষামন্ত্রী
‘চিহ্নিত একটি গোষ্ঠী পাঠ্যপুস্তক নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে’ উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‘যারা এর আগেও নানা বিভ্রন্তি ছড়িয়েছিল, তারাই আবারও ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা চলাচ্ছে।’
আজ বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) আশুলিয়ায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সমাবর্তন অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘যারা পঞ্চাশের দশকে বলেছিল, নৌকায় ভোট দিলে বিবি তালাক হয়ে যাবে, নব্বইয়ের দশকে বলেছিল–নৌকায় ভোট দিলে ফেনী পর্যন্ত ভারতের অংশ হয়ে যাবে, মসজিদে মসজিদে উলুধ্বনি হবে, এর কোনোটিই কিন্তু ঘটেনি। এই একই অপশক্তি নির্বাচনকে সামনে রেখে আবারও ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা চালাচ্ছে।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘পাঠ্যপুস্তকে ভুলত্রুটি যা রয়েছে, তা সংশোধন করা হচ্ছে। কিন্তু যে বিষয় বইতে নেই, যে বিষয় যেভাবে নেই, যে কথা বইতে বলা হয়নি, যে ছবি ছাপা হয়নি, সেগুলো মিথ্যাচার করে, ফটোশপ করে, এডিট করে আমাদের বইয়ের অংশ বলে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি তারা লেখক-শিক্ষকসহ যেসব শিক্ষাবিদ-বিশেষজ্ঞরা বই প্রণয়নে কাজ করেছেন, আমরা যারা মন্ত্রণালয়ে আছি; কদর্য ভাষায় কুৎসিৎভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ করছে। রীতিমতো হুমকিও দেওয়া হচ্ছে।’
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে পাঠ্যবই ইস্যু নিয়ে অপশক্তি ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা চালাচ্ছে অভিযোগ করে মন্ত্রী বলেন, ‘যারা পাঠ্যবই নিয়ে বলছেন, তাদের উদ্দেশ্য যদি সৎ হতো, তাহলে নিশ্চয়ই তারা মিথ্যার আশ্রয় নিতেন না, মিথ্যাচার করতেন না, কদর্য আচরণ করতেন না। আমাদেরকে হুমকি-ধমকিও দিতেন না।’
দীপু মনি আরও বলেন, ‘বইতে সুস্পষ্টভাবে বলা আছে—মানুষ বানর থেকে হয়নি। সেখানে তারা বলছেন, আমরা নাকি বইতে বলেছি—বানর থেকে মানুষ হয়েছে। এ মিথ্যাচার, অপপ্রচার কেন? আরও যা যা তারা বলেছেন, তার প্রত্যেকটি কথার জবাব আছে। কোনো ছবি, কনটেন্ট নিয়ে যদি কারও আপত্তি থাকে, এমনকি অস্বস্তি থাকলেও আমরা তা বিবেচনায় নেব।’
‘যারা মন্দ কাজ করছেন তাদের উদ্দেশ্যও মন্দ, পথও মন্দ’ উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা নিশ্চয় থেমে থাকব না। ভালো কাজ যা করার, তা করব। শিক্ষার্থীরা যেন আনন্দের সঙ্গে শিখতে পারে, বয়স অনুযায়ী সঠিক জিনিস শিখতে পারে। তবে, সমাজের যে বিষয়টি সংবেদনশীল সেটি বিবেচনায় নেব। যেখানে সংশোধন করা দরকার, সেটি সংশোধন করব। মিথ্যাচার, অপপ্রচার দিয়ে আমাদের অগ্রযাত্রাকে নিশ্চয়ই বন্ধ করা যাবে না।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ভারতের হিমাচল প্রদেশের শুলিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও উপাচার্য অধ্যাপক অতুল খোসলা, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম লুৎফর রহমান প্রমুখ।