আবার ডানা মেলার অপেক্ষায় আহত বাজপাখিটি
একটি বাজপাখি আহত অবস্থায় পড়েছিল ফসলি জমিতে। এক ছাত্র পাখিটি উদ্ধার করে নিয়ে যান উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ে। সেখানে চিকিৎসা শেষে বর্তমানে পাখিটির জায়গা হয়েছে ওই ছাত্রের বাসায়। সেখানে সেবা-শুশ্রূষায় সুস্থ হয়ে আবার ডানা মেলার অপেক্ষায় ক্ষিপ্রতার প্রতীক মানা বাজপাখিটি।
গত ৯ জানুয়ারি সন্ধ্যায় শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার মূলনা ইউনিয়নের বড় মূলনা এলাকা থেকে বাজপাখিটি উদ্ধার করেন জাজিরা কলেজের অনার্সের (রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ) চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি তানভীর ইসলাম (রোমান ছৈয়াল)। এখনও তাঁর বাড়িতেই বাজপাখিটি রয়েছে। এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পাখিটির ছবি ছড়িয়ে পড়েছে।
উদ্ধার হওয়া বাজপাখিটি দেখে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আতিকুর রহমান বলেন, ‘এটির বয়স তিন থেকে চার মাস হবে। পায়ে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আহত হয়। তাই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে, উড়ে যেতে পারেনি। আমাদের রাখার ব্যবস্থা নেই। তাই রোমানের বাসায় রাখা হয়েছে। আমরা খবর নিচ্ছি এবং চিকিৎসা দিচ্ছি। বাজপাখিটি অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছে।’
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জানান, বাজপাখি ঈগলের মতো শিকারি ও হিংস্র প্রজাতির। দিনের আলোতে শিকার ধরে। ধারালো নখ দিয়ে অন্যান্য পাখ-পাখালি, পোকা-মাকড়, মাছ ও কীট-পতঙ্গ শিকার করে খায়। পাখিটি উঁচু পাহাড়ের চূড়ায় বসবাস করা এবং একা থাকতে পছন্দ করে। সে নিজে পরিশ্রম করে খায়, অন্যের খাবার ছিনতাই করে না। বাজপাখি অত্যন্ত ক্ষীপ্রগতিসম্পন্ন পাখি। খুবই ধৈর্যশীল শিকারি। তার দৃষ্টিশক্তি বড় প্রখর।’
পাখিটির পরিচর্যাকারী তানভীর ইসলাম (রোমান ছৈয়াল) বলেন, ‘সন্ধ্যায় আহত অবস্থায় পাখিটিকে বড় মূলনা এলাকার সড়কের পাশের ফসলি জমিতে ডানা ঝাপটাতে দেখি। পরে উদ্ধার করে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ে নিয়ে যাই। পাখিটির বাম পায়ে ক্ষত ছিল। ক্ষতস্থান পরিষ্কার করে ড্রেসিং করে চিকিৎসা দিয়েছেন ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. সোহাগ। এখন ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছে। এক সপ্তাহে পাখিটি অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছে।’
রোমান ছৈয়াল আরও বলেন, ‘পাখি সম্পর্কে আমার তেমন কোনো ধারণা নেই। তবে বিভিন্ন ধরনের ছোট মাছ কিনে খাওয়াচ্ছি। স্বাভাবিকভাবেই খাচ্ছে। সম্পূর্ণ সুস্থ হলে পাখিটিকে অবমুক্ত করে দিব।’
জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান সোহেল বলেন, ‘রোমান অসুস্থ বাজপাখিটিকে সুস্থ করার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন। পাখিটি সম্পূর্ণ সুস্থ হলে আমরা সবাই মিলে অবমুক্ত করে দিব।’