আমার কোনো অভিযোগ নেই, সবাই ভালো থাকবেন : আইজিপি
চাকরিজীবনের শেষ কর্মদিবসে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, যারা ‘অন্যায় ও অযৌক্তিকভাবে’ তাদের বিপক্ষে আমাকে আবিস্কার করেছেন, তাদের প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নেই। সবাই ভালো থাকবেন।
রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। বেনজীর আহমেদ দীর্ঘ প্রায় সাড়ে ৩৪ বছরের পুলিশের নানা পদে দায়িত্ব পালন শেষে আজ অবসরে যাচ্ছেন।
ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘বিভিন্ন অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে যে, আমাদের দেশে এক ধরনের নষ্ট রাজনীতির দুষ্ট চর্চা ছিল; বা এখনও আছে। এক শ্রেণির মানুষের নষ্ট রাজনীতির দুষ্ট চর্চায় যারা আমাকে অন্যায়ভাবে, অযোক্তিকভাবে তাদের বিপক্ষে আবিস্কার করেছেন, তাদের প্রতি আজ আমি বলতে চাই; কোনো অভিযোগ নাই, কোনো অভিযোগ নাই। তারাও ভালো থাকবেন, সে প্রত্যাশা করি। কারণ, সবাইকে মিলেই আমার এই ভালোবাসার বাংলাদেশ। সবাইকে নিয়েই আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাব।’
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যাঁদের মধ্যে ড. বেনজীর আহমেদ একজন। গত বছরের ৯ ডিসেম্বর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট (রাজস্ব বিভাগ) ও পররাষ্ট্র দপ্তর।
আজ শেষ কর্মদিবসে ড. বেনজীর আহমেদের কাছে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ‘যৌক্তিক কারণে হোক আর অযৌক্তিক কারণে হোক, যুক্তরাষ্ট্র এটি দিয়েছে। যা এখনও বর্তমান। সেই নিষেধাজ্ঞা মাথায় নিয়ে আপনি অবসরে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে কেমন বোধ করছেন?’ প্রশ্নটি শুনে কোনো উত্তর না দিয়ে অন্য প্রসঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন আইজিপি।
ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘আমার ৩৪ বছর ৫ মাস ১৬ দিন কর্মজীবনের মধ্যে ২০১০ থেকে ২০২২ পর্যন্ত ১২ বছর পুলিশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি পদে দায়িত্ব পালন করেছি। ডিএমপি কমিশনার, র্যাব ডিজি ও সর্বশেষ আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে অনেক চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করেছি। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আপনারা সমর্থন জুগিয়েছেন, দেশবাসীও সমর্থন জুগিয়েছেন। তাই সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এ সময়ের মধ্যে যা কিছু অর্জন, সব রাষ্ট্রের ও রাষ্ট্রের মানুষের। আর যা কিছু ব্যর্থতা সব দায় আমার।’
‘ধারাবাহিক গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালনকালে চেষ্টা করেছি মানুষের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। চাকরির শেষ দিন মানে আগামীকাল থেকে জীবনের একটি পাতা উল্টিয়ে নতুন পাতা পড়ার চেষ্টা। তার মানে আগামীকাল থেকে দেখা হবে না, কথা হবে না এমনটি নয়। সামাজিক জীব হিসেবে সকলের সঙ্গে যোগাযোগ থাকবে, যেখানেই সুযোগ পাব একসঙ্গে দায়িত্ব পালন করব।’
আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ পুলিশের দুটি বিষয় বর্তমানে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয় উল্লেখ করে ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, কীভাবে আমরা সফলভাবে করোনা ক্রাইসিস অতিক্রম করেছি এবং সন্ত্রাসবাদ দমনে বাংলাদেশ পুলিশের সাফল্যের বিষয়ে সবাই জানতে চায়। কিছুদিন আগে জাতিসংঘে কাউন্টার টেরোরিজম ডিপার্টমেন্ট আমাদের কাছে জানতে চেয়েছে, আমরা কীভাবে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় সফল হয়েছি।