আরাফাত রহমান কোকোর ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী আজ
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এবং চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী আজ রোববার, ২৪ জানুয়ারি। মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দলীয় ও পারিবারিকভাবে তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে ইন্তেকাল করেন বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক আরাফাত রহমান কোকো। তাঁর বয়স হয়েছিল ৪৫ বছর। পরে ২৮ জানুয়ারি আরাফাত রহমানের মরদেহ দেশে আনা হয়। ওই দিনই বনানী কবরস্থানে তাঁর মরদেহ দাফন করা হয়।
বিগত সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জরুরি অবস্থার সময় মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে এক বছর কারাগারে ছিলেন আরাফাত রহমান কোকো। ২০০৮ সালের ১৭ জুলাই মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে যান তিনি। সেখান থেকে পাড়ি জমান মালয়েশিয়ায়। কুয়ালালামপুরে একটি বাড়ি ভাড়া করে থাকতেন।
অন্যদিকে মুদ্রা পাচার মামলায় বাংলাদেশের আদালতে ২০১১ সালে আরাফাত রহমান কোকোর ছয় বছর কারাদণ্ডাদেশ হয়। ২০১৩ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময়ে খালেদা জিয়া ব্যাংককে যাত্রাবিরতি দিয়ে ছোট ছেলেকে দেখতে গিয়েছিলেন। সেটাই ছিল মায়ের সঙ্গে তাঁর শেষ সাক্ষাৎ।
আরাফাত রহমান কোকো এমন সময়ে মারা যান যখন তাঁর মা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দেশের গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার রক্ষার আন্দোলন করতে গিয়ে গুলশানের কার্যালয়ে ২০১৫ সালের ৩ জানুয়ারি থেকে অবরুদ্ধ ছিলেন। সরকার তাঁর বাসার সামনে বালুর ট্রাক দিয়ে এবং বাসার গেটে তালা লাগিয়ে রাখে। ছেলের মৃত্যুর সংবাদে অচেতন হয়ে পড়েন খালেদা জিয়া। বারবার মূর্চ্ছা যান তিনি। বিদেশে ছয় বছরেরও বেশি সময় ধরে চিকিৎসার জন্য অবস্থান করলেও আদরের ছোট ছেলে এভাবে মারা যাবেন এমনটি খালেদা জিয়ার কল্পনায়ও ছিল না। পাশে থাকা পরিবারের স্বজনেরা সান্ত্বনা দিতে গেলেও তাঁকে থামানো যায়নি। ছেলের মৃত্যুতেও তিনি জনগণের ভোটের অধিকার রক্ষায় আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বিএনপির কর্মসূচি : আরাফাত রহমান কোকোর ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির পক্ষ থেকে বেশকিছু কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, আজ রোববার সকাল ১০টায় রাজধানীর বনানীতে মরহুমের কবর জিয়ারত ও মোনাজাত। সেখানে বিএনপির মহাসচিবসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।
সকাল সাড়ে ১০টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় দোয়া মাহফিল হবে। দুপুর সাড়ে ১২টায় মাদ্রাসা ও এতিমখানায় খাদ্য বিতরণ করা হবে। পল্লবী ও রুপনগরের মাদ্রাসা ও এতিমখানাগুলোতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
আজ বিকেল সোয়া ৪টার দিকে বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে দোয়া মাহফিল হবে। বিএনপির মহাসচিব প্রধান অতিথি হিসেবে সেখানে উপস্থিত থাকবেন। আর আগামী ২৬ জানুয়ারি মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আলোচনা সভা হবে। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এ ছাড়া দেশব্যাপী জেলা ও মহানগরসহ সব ইউনিট কার্যালয়গুলোকে মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া মাহফিল আয়োজন করার জন্য অনুরোধ করেছে বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর।