‘আশা জাগানিয়া’ উহানের চিকিৎসকদের আনতে চায় সরকার
ঘাতক করোনাভাইরাস চীনের হুবেই প্রদেশের যে উহান শহর থেকে সারা বিশ্বে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে সেই শহরে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন চিকিৎসকদের বাংলাদেশে নিয়ে আসার চিন্তা-ভাবনা করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
পরিকল্পনার কথা জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন সাপেক্ষে আরেকটি পদক্ষেপ আমরা গ্রহণ করতে চাচ্ছি। সেটা হলো- চায়না থেকে কিছু এক্সপার্ট নিয়ে আসার জন্য আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি। যেসব ডাক্তার-নার্স উহানে কাজ করেছেন, অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছেন তাদের বাংলাদেশে আনতে চাচ্ছি।’
‘এক্সপার্টরা যেন আমাদের ডাক্তার নার্সদের ট্রেনিং দিতে পারেন, ব্রিফ দিতে পারেন এবং দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল দেখে কী কী আরো বেশি প্রয়োজনীতা রয়েছে, কী কী আরো গ্যাপস রয়েছে এই বিষয়গুলো উনাদের কাছ থেকে আমরা জানব। জেনে আমরা সেই গ্যাপটি পূরণ করার চেষ্টা করব’, যোগ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
উহান শহর থেকে করোনাভাইরাস ছড়ালেও সেখানে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে এনেছে চীন সরকার। একে ভাইরাসটির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ‘আশা জাগানিয়া’ ব্যাপার বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
গতকাল শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান ড. টেড্রস অ্যাডহানম গেব্রেইয়েসুস সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘প্রথমবারের মতো উহানে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি। বিশ্বের অন্য দেশগুলোর জন্য আশা দেখাচ্ছে উহান। এমনকি এই জটিল পরিস্থিতিতেও আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারি।’
আজ শনিবার মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জাহিদ মালেক চীন থেকে চিকিৎসক আনার পরিকল্পনার পাশাপাশি দেশে নিজেদের প্রস্তুতির কথা তুলে ধরেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাসে যারা আক্রান্ত হবেন তাদের জন্য আমরা বিভিন্ন হাসপাতাল প্রস্তুত রেখেছি। তার মধ্যে নতুন দুইটি হাসপাতালের কথা আমরা চিন্তা করেছি। একটি হলো- শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রো ইনস্টিটিউট এবং শেখ হাসিনা নার্স ইনস্টিটিউট। এই দুইটি হাসপাতাল আমরা গ্রহণ করে যেকেনো সময় উন্নতর চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারব।’
প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে ৫০ জন এবং সারা দেশে ‘হোম কোয়ারেন্টিনে’ প্রায় ১৪ হাজার মানুষ রয়েছেন বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি আরো বলেন, ‘মার্চের ১ তারিখ থেকে যারা বিদেশ থেকে দেশে এসেছেন তাদের একটি তালিকা আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে নিয়েছি। সেই তালিকা আমরা সারা বাংলাদেশে পাঠিয়েছি। যারা বিদেশ থেকে এসেছেন এবং যারা আমাদের কাছে তথ্য গোপন করে আত্মগোপন করেছেন তাদের খুঁজে বের করে কোয়ারেন্টিনে নেওয়ার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। মার্চের আগে যারা এসেছে আমরা মনে করি তাঁরা এখন আর খুব খুব একটা আশঙ্কাজনক অবস্থায় নেই।’