আসছে শীত, কেনা-বেচায় সরগরম ভৈরবের ফুটপাত

Looks like you've blocked notifications!
শীতের আগমনে সরগরম হয়ে উঠেছে কিশোরগঞ্জের ভৈরবের ফুটপাতের কাপড়ের হাট। ছবি : এনটিভি

হেমন্তের রাতের হালকা শীত আর সকালে কুয়াশা মিশ্রিত বিন্দু বিন্দু শিশিরের উপস্থিতি বার্তা দিচ্ছে প্রকৃতিতে শীত আসছে শিগগিরই। এই শীতকে মোকাবিলায় গ্রামের দরিদ্র শ্রেণির মানুষও প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে। আর এই প্রস্তুতির অন্যতম হলো গরম কাপড় কেনা।

দরিদ্র আর অল্প আয়ের লোকজন ইচ্ছে থাকলেও বড় বড় মার্কেট বা শপিংমলগুলোতে যেতে পারে না, অধিক মূল্যের কারণে। তাদের ভরসা শহর বা মফস্বল শহরের ফুটপাতে গড়ে ওঠা কাপড়ের এ হাট। শীতের আগমনের আগে তাই সরগরম হয়ে ওঠে ফুটপাতের এই হাট।

শীতের আগমনে সরগরম হয়ে উঠেছে কিশোরগঞ্জের ভৈরবের ফুটপাতের কাপড়ের হাট। এখানে সব বয়সী মানুষের সুয়েটার, জ্যাকেট, টাউজার, গেঞ্জি, কার্ডিগান ইত্যাদি পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করা হয়। শপিংমল বা মার্কেটগুলোর দোকান থেকে কেনা কাপড়ের চেয়ে এখানকার কাপড়ের দাম কম হওয়ায়, পাইকারি ও খুচরা উভয় ক্রেতাদের ভিড় এই হাটে।

মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত ভৈরব বাজারের জিল্লুর রহমান শহর রক্ষা বাঁধ রোড, ভৈরবপুর দক্ষিণপাড়া, বাগানবাড়ি, বাদামপট্টি, নদীরপাড়, ছবিঘর শপিংমল রোড, জামে মসজিদ রোড ও কাচারি রোড জুড়ে এই হাটের ব্যাপ্তি। হরেক রকম পোশাক নিয়ে রাস্তার পাশের ফুটপাত দখল করে বসে এই হাট।

গাজীপুর, ঢাকার কেরানীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী এলাকার বিভিন্ন মিনি গার্মেন্টসে তৈরি এসব কাপড় ভৈরবের এই হাটে পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করা হয়। এখানে বেচা-বিক্রি ভালো হওয়ায় ওইসব মিনি গার্মেন্টসের মালিকরা তাদের উৎপাদিত কাপড় বিক্রি করতে নিয়ে আসেন বলে জানান।

এ বিষয়ে গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকার মিনি গার্মেন্টস মালিক জসিম উদ্দিন খান, কেরানীগঞ্জের সোহাগ মোল্লা ও নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের বাচ্চু মিয়া জানান, তারা তাদের ছোট ছোট কারখানায় তৈরি এইসব কাপড় ভৈরবে এনে বিক্রি করেন। ফুটপাতে বসে বিক্রি করায় দোকান-কর্মচারীর খরচ না থাকায় সহজেই মার্কেটের দোকানের চেয়ে কমে বিক্রি করে থাকেন। এতে তারা এবং পাইকারি ও খুচরা ক্রেতা-সবাই লাভবান হচ্ছে। নভেম্বর থেকে জানুয়ারি-এই তিন মাস এই কেনা-বেচা জমজমাট থাকে বলেও জানান তারা।

অপরদিকে ভৈরবসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলার খুচরা ব্যবসায়ীরা এখান থেকে কাপড় পাইকারি মূল্যে কিনে নিজেদের এলাকায় নিয়ে বিক্রি করে থাকেন। এতে তাদের বেশ মুনাফা হয় বলে জানান তারা। হবিগঞ্জের পাইকারি ক্রেতা ফেরদৌস মিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আক্তার হোসেন ও ভৈরবের মনির মিয়ার অভিমত, ফুটপাতের এই কাপড়গুলোর কোয়ালিটি ভালো। শুধু ফুটপাত থেকে তারা কেনায় ১০০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে কিনতে পারছেন। কম দামে কিনতে পারায়, নিজেদের দোকানে খুচরা বিক্রি করে তারা লাভবান হচ্ছেন।

অন্যদিকে স্থানীয় মার্কেটগুলোর তুলনায় প্রতিটি কাপড় অনেক সাশ্রয়ী মূল্যে কিনতে পারায় খুচরা ক্রেতারাও ভিড় জমান এই হাটে। নারী-পুরুষ উভয় শ্রেণির ক্রেতার উপস্থিতিতে তাই ফুটপাত ও সড়কগুলো হয়ে ওঠে সরগরম। একই কাপড় ভৈরবের যেকোনো মার্কেটের দোকানের তুলনায় এখানে কম দামে পাওয়ায় তাদের জন্য বেশ ভালো হয়েছে বলে জানালেন ভৈরব উপজেলার শিমুলকান্দি ইউনিয়নের মধ্যেরচর গ্রামের আলী আফরোজ, পৌর এলাকার জগন্নাথপুরের কবির মিয়া ও স্টেডিয়ামপাড়ার শওকত আলী।