ইজিবাইক ছিনতাই করে চালককে হত্যা, গ্রেপ্তার ৭
শাহাদাত হাওলাদার (৩০) প্রতিদিনের মতো গত ২৩ এপ্রিল বিকেলে গ্যারেজ থেকে ইজিবাইক নিয়ে বের হন। কিন্তু, তার আর কোনো খোঁজ মিলছিল না। পরিবার নানা স্থানে খুঁজেও তাকে পায়নি। ফোন নম্বরও ছিল বন্ধ। তিনি পরিবার নিয়ে রাজধানীর কদমতলীর মদিনাবাগ এলাকার থাকতেন।
২৪ এ্রপ্রিল সকালে এক অজ্ঞাত ব্যক্তি শাহাদাতের ফোন থেকে কল করে তার পরিবারকে জানায় মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান থানার কুচিয়ামোড়া রেলওয়ে ওভার ব্রিজের নিচে একটি মরদেহ পড়ে আছে। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিবার গিয়ে তার মরদেহ শনাক্ত করে।
এ ঘটনায় গত ২৪ এপ্রিল নিহতের ভাই শহিদুল ইসলাম জসিম (৪০) মুন্সীগঞ্জ সিরাজদিখান থানায় অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন। পরে জড়িত মূল পরিকল্পনাকারীসহ ছিনতাইকারী চক্রের সাতজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
র্যাবের দাবি, মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান এলাকায় শাহাদাতকে ব্রিজ থেকে ফেলে নির্মমভাবে হত্যা করে তার ইজিবাইক ছিনতাই করে নিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা।
আজ শনিবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন র্যাব-১০ অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন।
মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘স্ত্রী ও দুই সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে রাজধানীর কদমতলীর মদিনাবাগ এলাকায় একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন শাহাদাত। তিনি দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন চুনকুটিয়া এলাকার একটি গ্যারেজ থেকে ভাড়া করে ইজিবাইক চালাতেন।’
মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন আরও বলেন, ‘সিরাজদিখান থানা পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে উঠে আসে শাহাদাতের মাথা, মুখ ও কপালে জখমের বিষয়টি। পরে তার মরদেহ মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এরপরে র্যাব-১০-এর একটি দল দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ ঢাকা ও মুন্সীগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকাণ্ডে জড়িত মো. জুয়েল বেপারী (২৭), মো. সাজ্জাদ শেখ (২৩), মো. ইসমাইল হোসেন (২৩), মো. লিমন মাতুব্বর (২১), মো. সোহাগ (২০) ও রোমান শিকদারকে (১৮) গ্রেপ্তার করে।’
র্যাব-১০ অধিনায়ক বলেন, ‘গ্রেপ্তাররা শাহাদাতকে হত্যার পর ইজিবাইকটি মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখানে বসবাসরত মো. জাকির হোসেনের কাছে বিক্রি করে দেন। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের দেওয়া তথ্যমতে, র্যাব-১০-এর একটি দল আজ শনিবার ভোরে মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান এলাকায় অপর অভিযানে মো. জাকিরকে (৪০) গ্রেপ্তার করে। পরে তার গ্যারেজ থেকে ছিনতাইকৃত ইজিবাইকসহ মোট ছয়টি ইজিবাইক উদ্ধার করা হয়।’
মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘গ্রেপ্তার জুয়েল, লিমন ও ইসমাইলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যাচেষ্টা ও চুরিসহ একাধিক মামলা রয়েছে।’