ইন্টারন্যাশনাল ই-কনফারেন্স অন ইমারজিং পপুলেশন ইস্যুস ভার্চুয়াল সম্মেলন অনুষ্ঠিত

Looks like you've blocked notifications!
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগ ও ইউএনএফপিএ বাংলাদেশ যৌথভাবে ইমারজিং পপুলেশন ইস্যু নিয়ে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক ই-সম্মেলন আয়োজন করে। ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগ ও ইউএনএফপিএ বাংলাদেশ যৌথভাবে ইমারজিং পপুলেশন ইস্যু নিয়ে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক ই-সম্মেলন আয়োজন করেছে। সম্মেলনটির প্রথম দিনে গতকাল মঙ্গলবার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

ই-সম্মেলন উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। ইউএনএফপিএর বাংলাদেশ কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টটেটিভ ড. আশা টর্কেলসন ই-সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনের বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম. এ. মান্নান তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের জনসংখ্যার গুরুত্বপূর্ণ সূচকগুলোতে চলমান করোনাভাইরাস মহামারির প্রভাব সম্পর্কে আলোকপাত করেন।

উপাচার্য আখতারুজ্জামান উদ্বোধনী বক্তব্যে একইভাবে বাংলাদেশের জনসংখ্যার সমস্যা ও চলমান করোনভাইরাস মহামারির ফলে তার আর্থ-সামাজিক প্রভাব এবং সম্ভাব্য বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

ইউএনএফপিএর বাংলাদেশ কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টটেটিভ ড. আশা টর্কেলসন তাঁর বক্তব্যে ট্রিপল শূন্য অর্জনের ওপর জোর দিয়েছেন। শূন্য মাতৃমৃত্যু, পরিবার পরিকল্পনার জন্য শূন্য আনমেট ও জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতার শূন্য ঘটনা।

পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম ই-সম্মেলনটির উদ্বোধনী অধিবেশনে চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জাতীয় ও বৈশ্বিক উভয় প্রেক্ষাপটে চলমান মহামারি দ্বারা প্রভাবিত ইমারজিং পপুলেশন ইস্যুগুলোর আর্থ-সামাজিক, ডেমোগ্রাফিক এবং পলিসি সম্পর্কিত প্রভাব এবং তা সমাধান করার জন্য এই ই-সম্মেলনের সম্ভাবনা এবং প্রতিশ্রুতির ব্যাপারে জোর দিয়ে উদ্বোধনী অধিবেশনটি শেষ করেন।

এই ই-সম্মেলনটির পাঁচটি টেকনিক্যাল সেশন ছিল। এই টেকনিক্যাল সেশনগুলোতে ১১টি পত্র উপস্থাপন করা হয়। সেশনগুলোতে বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, চীন ও অস্ট্রেলিয়া থেকে উপস্থাপকরা তাদের পত্র উপস্থাপন করেন। প্রতিটি সেশন একটি স্বতঃস্ফূর্ত ও ইন্টারেক্টিভ প্রশ্নোত্তর পর্বও অনুসরণ করেছে।   

সম্মেলনের প্রথম দিন গতকাল তিনটি টেকনিক্যাল সেশন অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম দিন মোট সাতটি পত্র উপস্থাপন করা হয়। প্রথম সেশনটির শিরোনাম ছিল ‘মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং জনমিতিক লভ্যাংশ’। সেশনটির সভাপতিত্ব করেন ব্র্যাক বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান। এই সেশনে তিনটি পত্র উপস্থাপন করা হয়।

দ্বিতীয় টেকনিক্যাল সেশনটির শিরোনাম ছিল ‘মাইগ্রেশন ও উন্নয়ন’। সেশনটির সভাপতিত্ব করেন পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ. কে. এম নুরুন নবী। এই সেশনে দুইটি পত্র উপস্থাপন করা হয়। অস্ট্রেলিয়ার ম্যাককুরি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র প্রভাষক ড. সালুত মুহিডিন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. একিউএম মাহবুব ও অধ্যাপক ড. নুরুল ইসলাম নাজিম সম্মিলিতভাবে তাদের পত্র উপস্থাপন করেন।

তৃতীয় টেকনিক্যাল সেশনের শিরোনাম ছিল ‘একটিভ এজিং ও ওয়েলবিয়িং’। সেশনটির সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য সিনিয়র সচিব  অধ্যাপক ড. শামসুল আলম, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি),গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। এই সেশনে দুইটি পত্র উপস্থাপন করা হয়।

চতুর্থ টেকনিক্যাল সেশনের শিরোনাম ছিল ‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, ইউনিভার্সাল হেলথ কাভারেজ এবং এসআরএইচআর’। সেশনে সভাপতিত্ব করেন ইউএনএফপিএ বাংলাদেশের ডেপুটি কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ ড. এইকো নারিতা। এই সেশনে দুইটি পত্র উপস্থাপন করা হয়।

পঞ্চম টেকনিক্যাল সেশনের শিরোনাম ছিল ‘জলবায়ু পরিবর্তন এবং স্থানচ্যুতি চ্যালেঞ্জসমূহ’। সেশনের সভাপতিত্ব করেন ড. উবায়দুর রব, সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট ও কান্ট্রি ডিরেক্টর পপুলেশন কাউন্সিল, বাংলাদেশ। এই সেশনে দুইটি পত্র উপস্থাপন করা হয়।

সম্মেলনটির দ্বিতীয় দিনে আজ বুধবার সমাপনী অধিবেশনের প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ। অধ্যাপক সামাদ তাঁর বক্তব্যে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক, ইউনিভার্সাল হেলথ কাভারেজ নিশ্চিতকরণের চ্যালেঞ্জ, ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো সমস্যা, জনমিতিক লভ্যাংশের সুযোগ গ্রহণে বয়সের কাঠামো পরিবর্তন এবং ক্রমবর্ধমান প্রবীণ জনগোষ্ঠী এবং মানবসম্পদ উন্নয়নের মতো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোকপাত করেন।

ই-সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম। তিনি তাঁর বক্তব্যে জনমিতিক লভ্যাংশ অর্জনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের ওপর জোর দিয়েছেন। এর পাশাপাশি তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত জনসংখ্যার মতো ইস্যুগুলোর ব্যাপারেও আলোকপাত করেন।

পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম সম্মেলনটির সাফল্যের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে এই আন্তর্জাতিক ই-সম্মেলনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।