ইলিশের আকাল, পাঙাশের দখলে বরিশালের মাছবাজার
তেমন ইলিশ নেই বরিশালের পাইকারি মৎস্য আড়ত পোর্ট রোডে, তবে এখন পাঙাশে ভরা এই বাজার। ইলিশ কিনতে এসে অনেক ক্রেতাকেই দেখা গেছে নদীর পাঙাশ কিনতে।
আড়তদাররা জানিয়েছে, ইলিশের বোটেই পাঙাশ মাছ আসছে। যেহেতু বোটের সব মাছই রাখতে হয় সেহেতু ইলিশের পাশাপাশি এখন পাঙাশ মাছও বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের।
আজ বুধবার সকালে বরিশালের পোর্ট রোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে গিয়ে এমন চিত্রই দেখা গেছে। সব আড়তদাররাই কিছু ইলিশের পাশাপাশি পাঙাশও সাজিয়ে বসেছেন।
আড়তদার হাবিবুর রহমান বলেন, ‘নদীতে ইলিশের জালে বড় বড় সাইজের পাঙাশ মাছও উঠে আসছে। আমার আড়তেই ১৮টির মতো পাঙাশ এসেছে আজ। গতকাল পাঙ্গাস এসেছে ২১টি। এখন ইলিশের পাশাপাশি পাঙাশও বিক্রি করতে হচ্ছে।’
মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ইলিশ শ্রমিক শফিক বলেন, ‘মনে হয় ইলিশের চাইতে পাঙাশ মাছ জেলেরা বেশি নিয়া আইতেছে। ইলিশ তো নাই আইজগো তেমন, তয় পাঙাশ আছে দেহার মতো। ইলিশের আড়তদাররা পাঙাশ মাছ বেচে।’
জুলফিকার নামে এক পাইকারি ইলিশ বিক্রেতা বলেন, ‘এবারে নিষেধাজ্ঞার পর ইলিশ জেলেদের জালে ইলিশের পাশাপাশি দেশি মাছও অনেক ধরা পড়ছে। এর মধ্যে পাঙাশের সংখ্যা অনেক। ছোট নয়, বড় বড় পাঙাশ মাছ ধরা পড়েছে। তাই আমরা বাধ্য হয়েই এখন ইলিশের পাশাপাশি পাঙাশ বিক্রি করছি। যদিও ইলিশের আমদানি কম, এর মধ্যে পাঙাশ মাছ বিক্রি খারাপ হচ্ছে না। অনেক ক্রেতাই আমার কাছ থেকেই ইলিশ কিনতে এসে দামে না মিলাতে পেরে পাঙাশ মাছ কিনেছেন। নদীর পাঙাশের অসাধারণ স্বাদ হওয়ায় মাছপ্রেমিরা এই মাছ কিনতে ভুল করেন না।’
পোর্ট রোডের পাইকারি বাজারে ইলিশ ক্রেতা সুজয় সাহা বলেন, ‘ইলিশ কিনতে এসেছিলাম। কিন্তু আজকে প্রচুর দাম দেখে তা কেনার সাহস হয়নি। তবে ইলিশের মোকামেই পাঙাশ দেখেছি। আমরা দুইজন এসেছিলাম, ১০ কেজি ওজনের মাছ ভাগ করে কিনেছি। কেনার কারণ একটাই ইলিশ তো জোটেনি, এখন নদীর সুস্বাদু পাঙাশ দিয়েই জিহ্বাকে শান্ত করব।’
বরিশালের মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাস বলেন, ‘সব জেলে নিষেধাজ্ঞার পর একসঙ্গে নদীতে ইলিশ শিকার নামায় প্রায় সবার জালেই দেশি মাছও ধরা পড়ছে প্রচুর। যার মধ্যে পাঙাশ মাছের সংখ্যাই অনেক বেশি। তাই জেলেদের ট্রলারে ইলিশের পাশাপাশি পাঙাশ মাছও আসছে আড়তে।’