ই-কমার্স বন্ধ না করে রেগুলেটরি অথরিটি গঠনের সিদ্ধান্ত

Looks like you've blocked notifications!
ডিজিটাল কমার্স নিয়ে আজ বুধবার সচিবালয়ে বৈঠক করেন চারমন্ত্রী। ছবি : এনটিভি

ডিজিটাল কমার্স নিয়ে স্বরাষ্ট্র, তথ্য ও সম্প্রচার, আইন এবং বাণিজ্যমন্ত্রী বৈঠক করেছেন। ই-কমার্স বন্ধ না করে রেগুলেটরি অথরিটি গঠন করে সুশৃঙ্খল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এ বৈঠকে। আজ বুধবার সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির দপ্তরে এ বৈঠক হয়।

টিপু মুনশির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত থেকে মতামত দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। 

বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ই-কমার্স বন্ধ না করে সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার জন্য একটি রেগুলেটরি অথরিটি গঠন করা হবে। সারা বিশ্বে ই-কমার্স চালু রয়েছে। ইতোমধ্যে এ ব্যবসার সঙ্গে লাখ লাখ মানুষ জড়িত হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশে ডিজিটাল পদ্ধতিতে বাণিজ্য পরিচালিত হবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ই-কমার্স নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি রেগুলেটরি অথরিটি গঠন করা হবে। এখান থেকে ই-কমার্সের জন্য রেজিস্ট্রেশন প্রদান করা হবে এবং কঠোরভাবে ডিজিটাল বাণিজ্য মনিটরিং করা হবে। করোনাকালে ই-কমার্স সুনাম অর্জন করেছে, মানুষ উপকৃত হয়েছে। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের অসৎ ব্যবসা ও প্রতারণার কারণে সব ই-কমার্স বন্ধ করে দেওয়া ঠিক হবে না। যারা অপরাধ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের প্রতারণার সুযোগ না পায়, সে জন্য সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ই-কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা কার্যকর হওয়ার পর প্রতারণা বন্ধ হয়ে গেছে। এর আগে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান যে গ্রাহকদের প্রতারিত করেছে, ইতোমধ্যে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সে বিষয়ে আরও কী করা যায়, সরকার তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে।

সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ই-কমার্সে অনেক মানুষ প্রতারিত হওয়ার অভিযোগ আছে। ই-কমার্স পরিচালনার জন্য একটি আইন তৈরি করা প্রয়োজন। দেশের কোনো মানুষ যাতে ডিজিটাল বাণিজ্যে প্রতারিত না হন, সে জন্য পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। এজন্য একটি প্লাটফর্ম গঠন করা দরকার।

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশ ডিজিটাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ই-কমার্স জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মানুষ যাতে প্রতারিত না হন, সেজন্য আইন করা দরকার। এ ব্যবসা পরিচালনার জন্য একটি রেগুলেটরি অথরিটি গঠন করা যেতে পারে। গুটিকয়েক প্রতারণাকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য ই-কমার্স বন্ধ করে দেওয়া ঠিক হবে না। মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। এজন্য প্রচার মাধ্যম বিশেষ করে সোস্যাল মিডিয়াকে কাজে লাগাতে হবে। তাহলে প্রতারণার সুযোগ কমে আসবে। রেগুলেটরি অথরিটিকে অত্যাধুনিক করে গড়ে তুলতে হবে এবং মনিটরিং জোরদার করতে হবে।

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ই-কমার্স বন্ধ করে দেওয়া ঠিক হবে না। আইনের আওতায় এনে ই-কমার্সকে সুশৃঙ্খল করতে হবে। যাতে করে কেউ প্রতারণা করতে না পারে। মানুষ কম দামে পণ্য পেতে চাইবে, এটাই বাস্তবতা। ই-ব্যবসার জন্য জামানত রাখার ব্যবস্থা করা যায়। ব্যবসা যত বড় হবে জামানত তত বেশি হবে। মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হতে হবে। মানুষকে প্রতারণার বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর হতে হবে। মানুষ যাতে টাকা ফেরত পায় সেজন্য সহযোগিতা করা প্রয়োজন।

বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন, বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপারসন মো. মফিজুল ইসলাম, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা, র‌্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন, আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব রীনা পারভীন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) মো. হাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব (আইআইটি) এএইচএম সফিকুজ্জামান, বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মো. মেজবাউল হকসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কমকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।