ই-পাসপোর্ট চালু হলে প্রবাসীদের হয়রানি কমবে : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরাও পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন সেবাকে আরো যুগোপযোগী করতেই এই ই-পাসপোর্ট করতে যাচ্ছি। ভবিষ্যতে প্রবাসীরা আর হয়রানির শিকার হবেন না।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রথমে হাতে লেখা, পরে মেশিন রিডেবল, এখন ই-পাসপোর্ট, অর্থাৎ ধাপে ধাপে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আজ বুধবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনে কেন্দ্রে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরাও পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন সেবাকে আরো যুগোপযোগী করতেই এই ই-পাসপোর্ট করতে যাচ্ছি। ই-পাসপোর্টের সঙ্গে ই-গেট সেবা সংযুক্ত হলে এখন ইমিগ্রেশন সেবা স্বাচ্ছন্দ্যময় এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হবে। প্রবাসীরা যখনই আসেন, শোনা যায় যে তাঁরা নানারকম হয়রানির শিকার হন। ভবিষ্যতে আর তাঁরা এই হয়রানির শিকার হবেন না। আর দেশের যাঁরা বিদেশে যান, তাঁদেরও কোনো হয়রানির শিকার হতে হবে না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন শিক্ষিত জাতি হিসেবে বাংলাদেশ যেন গড়ে উঠতে পারে, সে লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। তাই বাংলাদেশকে উচ্চমর্যাদায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যেই ই-পাসপোর্ট চালু হচ্ছে।’
দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশেই সর্বপ্রথম ই-পাসপোর্ট চালু করতে সক্ষম হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী জানান, ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য ১৯৯৬ সাল থেকে তিনি উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ই-পাসপোর্ট চালু হলে প্রবাসীরা এবং বাংলাদেশে বিদেশিরা আর হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হবেন না।
এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি ই-পাসপোর্ট উদ্বোধন উপলক্ষে ইমিগ্রেশন এবং পাসপোর্ট অধিদপ্তরের (ডিআইপি) কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীর ছবি তুলে নিয়ে যান।
ডিআইপি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ সে সময় জানান, প্রাথমিকভাবে উত্তরা, যাত্রাবাড়ী ও আগারগাঁও আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে ই-পাসপোর্ট সেবা শুরু হবে।
পর্যায়ক্রমে ৭২টি আঞ্চলিক ও বিভাগীয় অফিস এবং ৮০টি বিদেশি মিশনে চালু করা হবে জানিয়ে শাকিল আহমেদ বলেন, জার্মান সংস্থা ভেরিডোস জিএমবিএইচ দেশে ই-পাসপোর্ট এবং ই-গেটে কাজ করছে।
আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের (আইসিএও) মতে, বর্তমানে ই-পাসপোর্ট ইস্যুকারী ১০০টিরও বেশি দেশ ও বেসরকারি সংস্থা রয়েছে এবং বিশ্বে ৪৯০ মিলিয়ন ই-পাসপোর্টধারী লোক রয়েছে।
প্রকল্পের তথ্যানুযায়ী, ‘বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট এবং স্বয়ংক্রিয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার’ প্রকল্পটি চার হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
ডিআইপি পুরো প্রকল্পটি সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়ন করছে। ১০ বছরে মোট ৩০ মিলিয়ন পাসপোর্ট বিতরণ করা হবে। ই-পাসপোর্ট সেবার সঙ্গে সঙ্গে অনলাইনের মাধ্যমে অভিবাসনের আনুষ্ঠানিকতারও পুরো প্রক্রিয়া শেষ হবে।
জার্মানিতে দুই মিলিয়ন ই-পাসপোর্ট তৈরি করা হবে। যাঁরা প্রথমে আবেদন করবেন, তাঁদের পাসপোর্ট জার্মানি থেকে তৈরি করা হবে। ই-পাসপোর্টের মেয়াদ পাঁচ ও ১০ বছরের জন্য হবে।
২০১৮ সালের ১৯ জুলাই ডিআইপি এবং জার্মানি ভেরিডোস জিএমবিএইচ সংস্থা ইলেকট্রনিক পাসপোর্টের জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে।