একই পরিবারের তিনজনকে হত্যা : ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলায় একই পরিবারের তিনজনকে হত্যার পর মাটিচাপা দিয়ে গুম করার ঘটনায় নয়জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। কটিয়াদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল গতকাল শুক্রবার রাত ১০টার দিকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
ওসি জানান, নিহত আসাদ মিয়া ও পারভিন আক্তার দম্পতির মেজ ছেলে তোফাজ্জল হোসেন বাদী হয়ে কটিয়াদী থানায় হত্যা মামলাটি করেছেন। আসামিদের মধ্যে গত বৃহস্পতিবার রাতেই সন্দেহভাজন হিসেবে চারজনকে আটক করে পুলিশ। পরে তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
গ্রেপ্তার চারজন হলেন নিহত আসাদের ছোট ভাই দীন ইসলাম, মা জুমেলা বেগম, বোন নাজমা ও ভাগনে আল-আমিন। বাকি পাঁচ আসামিদের সবাই তাঁদের নিকটাত্মীয় বলে জানান ওসি।
ওসি এম এ জলিল আরো জানান, এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন আসামি দীন ইসলাম। জমিজমা ও পারিবারিক বিরোধের জেরে এ নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। জিজ্ঞাসাবাদে দীন ইসলাম আরো জানান, তিনি একাই শাবলের আঘাতে তিনজনকে হত্যা করে অন্যদের সহায়তায় মাটি চাপা দেন। পরে গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পুলিশ দীন ইসলামকে নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত শাবলটি উদ্ধার করে।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কটিয়াদীর বনগ্রাম ইউনিয়নের জমশাইট গ্রামে বাড়ির কাছেই মাটি চাপা দেওয়া অবস্থায় মো. আসাদ মিয়া (৫৫), তাঁর স্ত্রী পারভিন আক্তার (৪৫) ও তাঁদের ছেলে লিয়নের (৮) লাশ উদ্ধার করে পুলিশের একটি দল। নিহতরা গত বুধবার থেকে নিখোঁজ ছিল।
নিহত আসাদ মিয়া জমশাইট বাজারের একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। মোফাজ্জল (২৫) ও তোফাজ্জল (১৩) নামের আরো দুই ছেলে রয়েছে তাঁর। তারা বাড়িতে না থাকায় প্রাণে বেঁচে যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ওসির বরাতে মামলার বিবরণে জানা যায়, নিহত আসাদ, তাঁর স্ত্রী পারভিন ও ছেলে লিয়ন গত বুধবার রাতে ঘুমিয়ে পরেছিল। পরে গতকাল সকালে মেজ ছেলে তোফাজ্জল নানাবাড়ি থেকে ফিরে নিজেদের বাড়িতে যায়। কিন্তু বাড়িতে মা-বাবা ও ছোট ভাইকে খুঁজে পায়নি সে। পরে আত্মীয়-স্বজনের কাছে জিজ্ঞেস করলেও কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি।
পরে তোফাজ্জল পুলিশের কাছে বিষয়টি জানালে পুলিশ নিখোঁজদের সন্ধানে মাঠে নামে। এরপর রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাড়ির পেছনে একটি নির্জন স্থানের গর্ত থেকে একটি হাত দেখা গেলে এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দেয়। সঙ্গে সঙ্গে ঊর্ধ্বতন মহলকে বিষয়টি অবহিত করেন ওসি এম এ জলিল। খবর পেয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) মাশরুকুর রহমান খালেদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়।
লাশ তিনটির ময়নাতদন্ত গতকাল দুপুরে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে সম্পন্ন হয়।