একজনের বিরুদ্ধে অর্ধশত গায়েবি মামলা, বাদী খুঁজে বের করতে সিআইডিকে নির্দেশ

Looks like you've blocked notifications!

রাজধানীর শান্তিবাগ এলাকার বাসিন্দা একরামুল আহসান কাঞ্চনের বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণ, নারী নির্যাতন, মানবপাচার, ডাকাতিসহ নানা অভিযোগে করা অর্ধশত গায়েবি মামলার বাদীকে খুঁজে বের করতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ আজ সোমবার এ আদেশ দেন।

একইসঙ্গে অনুসন্ধান শেষে আগামী দুই মাসের (৬০ দিনের) মধ্যে সংশ্লিষ্টদের হাইকোর্টে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন আদালত।

এ ছাড়া এখন থেকে থানায় বা আদালতে মামলা দায়ের করলে অভিযোগ দায়েরকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বাধ্যতামূলকভাবে জমা দিতে হবে বলে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

খুন, ধর্ষণ, নারী নির্যাতন, মানবপাচার, ডাকাতিসহ নানা অভিযোগে করা অর্ধশত গায়েবি মামলার বাদিকে খুঁজে বের করতে সিআইডির প্রতি নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানিতে তারা এ আদেশ দেন।

আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার ও অরবিন্দ কুমার রায়।

এর আগে গত ৮ জুন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট ভার্চুয়াল বেঞ্চে রিটটির শুনানি করা হবে বলে আদেশ দেন। তারই ধারাবাহিতায় রিট শুনানির জন্য আজ হাইকোর্টে উঠেছে।

একরামুল আহসান কাঞ্চনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, নারী নির্যাতন, ডাকাতিসহ নানা অভিযোগে বিভিন্ন সময়ে হওয়া মামলার বাদিকে খুঁজে না পেয়ে গত সোমবার (৭ জুন) এর প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় তার পক্ষে আইনজীবী এমাদুল হক বসির রিট আবেদন করেন। আবেদনে মামলার ভুয়া বাদিদের খুঁজে বের করার নির্দেশনা চাওয়া হয়।

রিটে স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি), পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক, সিআইডির অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক, র‍্যাবের মহাপরিচালক ও ঢাকার পুলিশ কমিশনারসহ ৪০ জনকে বিবাদি করা হয়।

রিটে বলা হয়, রাজধানীর শান্তিবাগ এলাকার বাসিন্দা একরামুল আহসান কাঞ্চনের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জেলায় নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, চুরি, ডাকাতি ও মানবপাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে ৪৯টিরও বেশি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় তাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়। কিন্তু একটি মামলারও বাদিকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

রিটে আরও বলা হয়, এ বিবেচনায় অনেক মামলায় খালাস পেয়েছেন তিনি। তারপরও তার বিরুদ্ধে এভাবে গায়েবি মামলা দিয়ে হয়রানি করায় তার মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। এসব মামলায় এক হাজার ৪৬৫ দিন জেলও খেটেছেন একরামুল।

এ পর্যন্ত ৪৯টি মামলা হয়েছে দাবি করে রিটকারী একরামুল আহসান কাঞ্চন বলেন, ‘হত্যা, ধর্ষণ, চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও মানবপাচারের মতো ভয়ঙ্কর অপরাধের অভিযোগে আমার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এমন কোনো অভিযোগ নেই, যা আমার বিরুদ্ধে করা হয়নি। কিন্তু এখন পর্যন্ত এসব মামলার বাদিদের খুঁজে পাইনি।’

একরামুল আহসান কাঞ্চন আরও বলেন, ‘এসব মামলায় দীর্ঘদিন জেলও খেটেছি। এর মধ্যে অনেক মামলায় আদালত বাদি খুঁজে না পাওয়ায় খালাস পেয়েছি। এখন ক্ষতিপূরণ চেয়ে এবং মামলার বাদি খুঁজে বের করতে নির্দেশনা চেয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করেছি।’

রিটে বাদির অস্তিত্ব বের করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি নির্দেশনা চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত একরামুল আহসান কাঞ্চনের ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে।