একদিনে ৪৭ মামলার রায়, ফুল নিয়ে বাড়ি ফিরল ৪৭ দম্পতি

Looks like you've blocked notifications!
সুনামগঞ্জের আদালতে আজ বুধবার ৪৭ মামলায় রায় ঘোষণার পর আদালতের কর্মীরা দম্পতিদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। ছবি : এনটিভি

সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আজ বুধবার ৪৭টি মামলার রায় হয়েছে। যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগে স্বামীর বিরুদ্ধে এসব  মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এই মামলাগুলো আপসে নিষ্পত্তি হওয়ায় আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন মামলার রায়ে আসামিদের খালাস দিয়েছেন। রায় ঘোষণার পর আদালতের কর্মীরা দম্পতিদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

এদিকে এই রায়কে যুগান্তকারী উল্লেখ করে আইনজীবী এবং বাদী-বিবাদীরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) নান্টু রায় বলেন, ‘এই রায় একটা নজির। আদালত নিজে সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের সহায়তার এই মামলাগুলো আপসে নিষ্পত্তির উদ্যোগ নিয়েছেন। সংসারে বিভিন্নভাবে স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়ে নারীরা আদালতে এসব মামলা দায়ের করেছিলেন। স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া, ক্ষোভ, মান-অভিমানসহ তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে স্বামী ও স্বামীর পরিবারে অন্যদের জড়িয়ে যৌতুকের দাবির অভিযোগে মামলা দায়ের হয়। আদালতের ব্যতিক্রমী এ রায় সমাজে একটা ইতিবাচক বার্তা দেবে।’

রায় ঘোষণার পর দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার জামাল মিয়া বলেন, ‘তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে স্ত্রী আমার বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবির অভিযোগে মামলা দায়ের করেছিলেন। পরে আমরাই বিষয়টি বুঝতে পারি। আদালত থেকেও আপসে নিষ্পত্তির জন্য উৎসাহিত করা হয়েছে। কয়েক মাস স্ত্রী ও সন্তান আমার কাছে ছিল না। আজ তাদের বাড়িতে নিয়ে যাব। এই রায়ে আমরা খুশি।’

পিপি নান্টু রায় জানান, এই মামলাগুলো আপসে নিষ্পত্তির শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে, তাঁরা সন্তানসহ পরিবারের সবাইকে নিয়ে মিলেমিশে চলবেন। স্বামী-স্ত্রী একে-অপরকে যথাযথ সম্মান দেবেন এবং শান্তি বিনষ্ট হয় এমন কোনো কাজ আর করবেন না। স্ত্রী বা তাঁর পরিবারের কাছে কোনো যৌতুক চাওয়া যাবে না। ছোটখাটো কোনো বিরোধ দেখা দিলে পারিবারিকভাবে বসে শান্তিপূর্ণভাবে তা সমাধান করবেন। স্ত্রীকে কখনো নির্যাতন করা যাবে না। যদি স্বামী সেটা করেন তাহলে স্ত্রী আইনানুগ ব্যবস্থা নিলে কোনো বাধা থাকবে না।

একটি মামলার আইনজীবী আইনুল ইসলাম বাবলু বলেন, ‘এই রায় একটা দৃষ্টান্ত। এতে পারিবারিক বন্ধন আরো দৃঢ় হবে। মামলা অনেক ক্ষেত্রে বিভেদ আরো বাড়িয়ে দেয়। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মামলা হলে বিপাকে পড়ে সন্তানেরা। আজ মামলাগুলোর নিষ্পত্তি হওয়ায় সবাই একসঙ্গে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে গেছে। এটা খুবই ভালো লেগেছে।’