এবি ব্যাংকের তিন কর্মকর্তাসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র
ভুয়া অফশোর কোম্পানিতে বিনিয়োগের নামে ১৬৫ কোটি টাকা পাচারের দায়ে আরব বাংলাদেশ ব্যাংকের (এবি ব্যাংক) সাবেক চেয়ারম্যান ও দুই এমডিসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রের অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ বৃহস্পতিবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে ওই অভিযোগপত্রের (চার্জশিট) অনুমোদন দেওয়া হয়। শিগগিরই সংস্থাটির উপপরিচালক ও তদন্ত কর্মকর্তা মো. গুলশান আনোয়ার আদালতে তা দাখিল করবেন।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি মামলাটি দায়ের করা হয়।
অভিযোগভুক্ত আট আসামি হলেন এবি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল হক, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামীম আহমেদ চৌধুরী, মো. ফজলুর রহমান, সাবেক হেড অব ফিন্যান্সিয়াল অ্যান্ড ট্রেজারি আবু হেনা মোস্তফা কামাল, এবি ব্যাংকের হেড অব অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটের (ওবিইউ) মোহাম্মদ লোকমান, হেড অব ফিন্যান্সিয়াল অ্যান্ড ট্রেজারি মোহাম্মদ মাহফুজ উল ইসলাম, এবি ব্যাংকের গ্রাহক আটলান্টিক এন্টারপ্রাইজের মালিক সাইফুল হক এবং এবি ব্যাংকের পরিচালক সৈয়দ আফজাল হাসান উদ্দিন।
ব্যাংকটির জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. নুরুল আজিম মামলার আসামি করা হলেও অভিযোগপত্র থেকে তাঁকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
মামলার এজাহারে আছে, আসামিরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে ভুয়া অফশোর কোম্পানিতে বিনিয়োগের নামে মোট ২০.০২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ১৬৫ কোটি টাকা এবি ব্যাংকের চট্টগ্রাম ইপিজেড শাখা থেকে দুবাইয়ে পাচার করে এবং পরে তা আত্মসাৎ করে। কথিত ওই বিনিয়োগ এবং অর্থ আত্মসাতের নেপথ্যে ব্যাংকের গ্রাহক আটলান্টিক এন্টারপ্রাইজের মালিক সাইফুল হকের প্রধান ভূমিকা ছিল। এক সময় স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে কাজ করা সাইফুল হকের এবি ব্যাংকে কোনো অংশীদারত্ব নেই। তবে তিনি ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা মোরশেদ খানের মেয়ের স্বামী।
মামলার এজাহারে আরো বলা হয়, প্রাক্তন চেয়ারম্যান ওয়াহিদুল হক ও আবু হেনা মোস্তফা কামাল ব্যাংকের বোর্ডকে না জানিয়ে ব্যক্তিগত উদ্যোগে দুবাই গিয়ে প্রতারক চক্রের সঙ্গে বৈঠক করেন। আর ওই প্রতারক চক্র পিনাকল গ্লোবাল ফান্ডের (পিজিএফ) নামে একটি কোম্পানি গঠন করে। সেই কথিত পিনাকলের আট কোটি ডলারের সঙ্গে এবি ব্যাংকের দুই কোটি ডলার মিলিয়ে ১০ কোটি ডলারের একটি তহবিল গঠন করে তা দুবাইয়ে বিনিয়োগের একটি কাল্পনিক প্রস্তাব তৈরি করা হয়। আবু হেনা মোস্তফা কামাল ও শামীম আহমেদের যৌথ স্বাক্ষরে ব্যাংকের বোর্ড সভায় উপস্থাপন করে তা পাস করিয়ে নেওয়া হয় ২০১৩ সালে। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুবাইয়ে চেং বাও জেনারেল ট্রেডিং এলএলসি নামের এক কোম্পানির নামে পাঠানো ওই দুই কোটি ডলার আবুধাবির একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে যায়। সেখান থেকে পরে সে টাকা আত্মসাৎ করা হয়।