এমপি হারুনের আসন কেন শূন্য ঘোষণা হবে না, রুল
শুল্ক ফাঁকির অভিযোগের মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের বিএনপিদলীয় সংসদ সদস্য (এমপি) হারুন অর রশীদের আসন কেন শূন্য ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
আজ মঙ্গলবার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল জারি করেন।
এদিকে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে আইন সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক, হারুন অর রশীদ এমপি, নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিবকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী দেওয়ান ড. মো. আবু ওবায়েদ হোসেন (সেতু)। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জেসমিন সুলতানা সামশাদ ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সামীউল আলম সরকার।
আইনজীবী ড. দেওয়ান মো. আবু ওবায়েদ হোসেন গণমাধ্যমেকে বলেন, ‘হারুনের পাঁচ বছরের সাজা হয়েছিল। সংবিধানের ৬৬(২)(খ) অনুচ্ছেদে বলা আছে, কোনো সংসদ সদস্য এ পদের অযোগ্য হবেন যদি ফৌজদারি মামলায় তিনি অন্যূন দুই বছর দণ্ডিত হন। সেখানে হারুন অর রশীদ পাঁচ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত। সে কারণে জনস্বার্থে রিট করি।’
দেওয়ান মো. আবু ওবায়েদ হোসেন বলেন, ‘মামলার রায় ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে বিচারিক আদালত এর অনুলিপি সংসদ সচিবালয়ের সচিব বরাবরে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাঠিয়েছিলেন। তারা এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা না করায় আমরা লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছিলাম। সেটাতে কোনো সাড়া না পেয়ে ১৩ আগস্ট রিট দায়ের করি। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে কেন হারুন অর রশীদের এ আসনকে শূন্য ঘোষণা করা হবে না মর্মে রুল জারি করেছেন আদালত। একইসঙ্গে সংসদ সদস্য হিসেবে তাঁর কার্যক্রম কেন অবৈধ হবে না মর্মেও রুল জারি করা হয়েছে।’
গত বছরের ২১ অক্টোবর শুল্ক ফাঁকির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় বিএনপির সংসদ সদস্য হারুন অর রশীদকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম।
এমপি হারুন ছাড়াও পলাতক আসামি ব্যবসায়ী এনায়েতুর রহমান বাপ্পীকে দণ্ডবিধির ৪০৯ ও ১০৯ ধারায় দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড করেছেন এবং তা দিতে ব্যর্থ হলে অনাদায়ে আরো দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। এ ছাড়া ইশতিয়াক সাদেককে তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ৪০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে জানা যায়, ২০০৭ সালের ১৭ মার্চ বিএনপির সংসদ সদস্য থাকা অবস্থায় শুল্কমুক্ত গাড়ি এনে তা বিক্রির ঘটনায় হারুন অর রশীদসহ তিনজনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলা করেন পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) ইউনুস আলী। পরে মামলাটি তদন্ত করে সংসদ সদস্য হারুনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে একই বছরের ১৮ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দেন দুদকের সহকারী পরিচালক মোনায়েম হোসেন।
সেই বছরের ২০ আগস্ট বিচার শুরুর নির্দেশ দেন একই আদালত।