এমসি কলেজে ধর্ষণ : সেই রাতের ঘটনার বর্ণনা দিলেন গৃহবধূ 

Looks like you've blocked notifications!

সিলেট মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজের ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে গণধর্ষণের ঘটনার বিবরণ জানিয়ে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ভুক্তভোগী গৃহবধূ। আজ রোববার দুপুরে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন খানম নিলার আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় জবানবন্দি দেন তিনি।

এ বিষয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) অমূল্য কুমার চৌধুরী নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আজ দুপুরে পুলিশ ওই গৃহবধূকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে সিলেটের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিয়ে আসে। এরপরে দুপুর দেড়টার দিকে  ভুক্তভোগী গৃহবধূ আদালতে জবানববন্দি দেন।

এর আগে আজ গণধর্ষণের অভিযোগে করা মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমানকে সুনামগঞ্জ ও ৪ নম্বর আসামি অর্জুন লস্করকে হবিগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলা থেকে আজ ভোরে সাইফুর রহমানকে এবং হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার মনতলা এলাকা থেকে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অর্জুন লস্করকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ছাতক সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) বিল্লাল হোসেন সাইফুরের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অন্যদিকে, অর্জুন লস্করকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) ফরিদ উদ্দিন।

সাইফুরকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে এএসপি বিল্লাল হোসেন জানান, গ্রেপ্তারকৃত সাইফুর রহমান সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার চান্দাইপাড়ার বাসিন্দা। তিনি গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি। তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলাও রয়েছে।

এ ঘটনায় গতকাল শনিবার ওই গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো তিনজনকে আসামি করে মামলা করেন। সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) শাহ পরাণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাইয়ুম বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন।

মামলার আসামিরা হলেন সাইফুর রহমান (২৮), শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি (২৫), তারেক (২৮), অর্জুন লস্কর (২৫), রবিউল ইসলাম (২৫) ও মাহফুজুর রহমান মাছুম (২৫)। তাঁদের মধ্যে সাইফুর রহমান বালাগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা, রনির বাড়ি হবিগঞ্জে, তারেক সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার বাসিন্দা, অর্জুনের বাড়ি সিলেটের জকিগঞ্জে, রবিউলের বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় ও মাহফুজুর রহমান মাছুমের বাড়ি সিলেট সদর উপজেলায়।

অভিযোগ উঠেছে, মামলার এই ছয় আসামি ছাত্রলীগের কর্মী। এ বিষয়ে ওসি আবদুল কাইয়ুম জানান, মামলায় ছয়জনকে সরাসরি জড়িত বলে আসামি করা হয়েছে। তবে মামলার এজাহারে তাঁদের ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে উল্লেখ করা হয়নি। অন্য তিনজনের বিরুদ্ধে সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়েছে।

অভিযান চালিয়ে মামলার আসামি এম সাইফুর রহমানের কক্ষ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। গত শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে সাইফুরের কক্ষ থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র, চারটি রামদা, একটি ছোরা ও জিআই পাইপ উদ্ধার করা হয়।

জানা গেছে, স্বামীকে নিয়ে ঘুরতে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় এমসি কলেজে গিয়েছিলেন ওই গৃহবধূ। এ সময় কলেজ ক্যাম্পাস থেকে পাঁচ থেকে ছয়জন তাঁদের জোরপূর্বক কলেজের ছাত্রাবাসে নিয়ে যান। সেখানে একটি কক্ষে স্বামীকে আটকে রেখে তরুণীকে গণধর্ষণ করেন তাঁরা। পরে ওই তরুণীকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসা দেওয়া হয়।