এসআইয়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলার আসামি ভাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ
কুমিল্লার মুরাদনগরে তিন বছরের শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় আসামিদের ভাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের এক উপপরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ওই এসআই বোরহান মুরাদনগর থানায় কর্মরত।
শিশুটির বাবা জানান, গত বৃহস্পতিবার মুরাদনগর তার বাসা থেকে তিন বছরের একমাত্র মেয়েকে তার নানার বাড়িতে নিয়ে রেখে আসেন। তার ((শিশুর বাবা) মামাতো ভাই কামাল মিয়ার ছেলে সোহাগ মিয়া (১৬) ও শাহজাহানের ছেলে সাদেক মিয়া (১৭) প্রায়ই তার বাসায় আসা-যাওয়া করত। সেই সুবাদে তারা তাকে (ধর্ষিতা শিশুর বাবা) ফোন করে বলে বাসায় আসবে। তখন তিনি তাদের দুজনকে তার মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে আসতে বলেন। সোহাগ ও সাদেক মেয়েকে নিয়ে বাসায় বিকেল ৪টায় আসার কথা থাকলেও ৬টার দিকে এসে তাড়াহুড়া করে শিশুটিকে মায়ের কাছে রেখে চলে যায়। তারা (সোহাগ ও সাদেক) চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিশুটি তার গোপনাঙ্গ ধরে কান্না করতে করতে বলে চাচ্চুরা আমাকে দুই হাত ধরে রেখে অনেক মেরেছে। তখন তার মায়ের সন্দেহ হলে শিশুর কাপড় খুলে দেখেন রক্ত। তিনি তাকে মুরাদনগর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বলেন মেয়ের গোপনাঙ্গে কিছু প্রবেশ করানো হয়েছে। যার ফলে সে ব্যথায় কাতরাচ্ছে। পরে বিষয়টি নিয়ে মুরাদনগর থানায় গেলে পুলিশ এই সকালে আসে, এই বিকেলে আসে বলে নানা অজুহাতে ঘুরাতে থাকে। এতেও কোনো কাজ না হওয়ায় স্থানীয় কিছু সংবাদকর্মীর সহযোগিতায় গতকাল মঙ্গলবার সকালে লিখিত অভিযোগ নিয়ে মেয়ের বাবা থানায় যান। তখন থানায় কর্মরত এসআই বোরহান সহযোগিতা না করে উল্টো হয়রানি করতে থাকেন। আসামিদের না ধরে মেয়ের বাবার সামনে তাদের ফোন করে মামলার বিষয়টি জানিয়ে দেন। অপরদিকে মেয়ের বাবাকে আজ বুধবার সকালে যেতে বলেন মামলা রুজু করতে।
মেয়ের বাবা আরও জানান, খবর নিয়ে জানতে পেরেছেন এসআই বোরহান আসামিদের ফোন করে জানিয়ে দেওয়ার পর তারা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে। এখন শিশু মেয়েকে নির্যাতনের বিচার পাওয়া নিয়ে খুব শঙ্কায় আছেন তিনি। কারণ যেখানে একজন পুলিশ হয়ে আসামিদের না ধরে পালিয়ে যেতে সহায়তা করে, সেখানে সুষ্ঠু বিচার কীভাবে আশা করবেন তিনি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত এসআই বোরহান মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি কোনো আসামি ভাগিয়ে দেইনি কিংবা ওই শিশুটির পরিবারের কাউকে কোনো ধরনের হয়রানিও করিনি। অভিযোগ পেয়ে আমি ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে ওই এলাকার জনপ্রতিনিধিদের ফোন দিয়েছি। এখন যদি আসামি ভেগে যায়, আমার কী করার আছে?’
মুরাদনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পীযূষ চন্দ্র দাস বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানতে পেরে ওই শিশুটি ও তার মা-বাবার সঙ্গে কথা বলে গতকাল বিকেলে মামলা রুজু করার জন্য মুরাদনগর থানাকে বলে দিয়েছি। শিশুটি ছোট হলেও সে নিজেই আমার কাছে ঘটনার বিবরণ দিয়েছে। যেটা আমি কখনও কল্পনাও করিনি।’
আসামিদের না ধরে ভাগিয়ে দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে পীযূষ চন্দ্র দাস বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই।’