এসডিজি অর্জনে বাংলাদেশে কৃষির কোনো বিকল্প নেই : কৃষিমন্ত্রী

Looks like you've blocked notifications!
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক। ফাইল ছবি

বাংলাদেশের মতো কৃষিপ্রধান দেশের জন্য টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজি অর্জনে কৃষি খাতে উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান শতকরা হারের হিসাবে আগের তুলনায় কমলেও এর গুরুত্ব কমেনি। দারিদ্র্য বিমোচন এবং সবার জন্য খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষির অবদান অতীতে ছিল, বর্তমানে আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।

এগ্রিকালচারাল রিপোর্টার্স ফোরাম (এআরএফ) আয়োজিত ‘বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে কৃষির ভূমিকা’ শীর্ষক এক অনলাইন সেমিনারে বা ওয়েবিনারে গতকাল বুধবার প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক ফয়জুল সিদ্দিকি এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ মাকসুদুল হাসান।

বৈশ্বিক কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাবে বাংলাদেশ এসডিজি অর্জনে পিছিয়ে পড়েছে কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়ে মন্তব্য করার সময় এখনো আসেনি। মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশের কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়।’

আলুর বাজারমূল্য নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকেরা যাতে ন্যায্যমূল্য পান, সে বিষয়ে সরকার সচেতন। তাই আলুর দাম কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা করা হয়েছে। কিন্তু মুনাফালোভী মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ীরা এর সুযোগ নিচ্ছেন। ভোক্তা ও বাজার ব্যবস্থার প্রতি দায়িত্বশীল আচরণ করতে হিমাগার ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানান কৃষিমন্ত্রী।

ওয়েবিনারে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজিবিষয়ক) জুয়েনা আজিজ এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক কৃষি সচিব আনোয়ার ফারুক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এআরএফের সভাপতি মো. আশরাফ আলি।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজিবিষয়ক) জুয়েনা আজিজ বলেন, ‘কৃষি খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটেছে। স্বাধীনতার পর সাত কোটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যেখানে অসম্ভব ছিল, সেখানে এখন ১৭ কোটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে। কোভিড-১৯-এর কারণে কৃষি খাত কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সরকারের সময়োপযোগী উদ্যোগে তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক কৃষি সচিব মো. আনোয়ার ফারুক বলেন, ‘গত ১০ বছরে কৃষি খাতে অবিস্মরণীয় উত্তরণ ঘটেছে। কৃষির আধুনিকীকরণ, গবেষণার মাধ্যমে উন্নত জাত সৃষ্টিসহ নানামুখী সফলতা রয়েছে বর্তমান সরকারের। কিন্তু দুর্বল বাজার ব্যবস্থার কারণে সেই সাফল্য কিছুটা ম্লান হয়েছে।’ তাই এখন কৃষির বাজার ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য আরো কাজ করা দরকার বলে মন্তব্য করেন মো. আনোয়ার ফারুক।

এ ছাড়া ওয়েবিনারে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের এসডিজিবিষয়ক কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) মহাপরিচালক ড. মো. নাজিরুল ইসলাম, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কাউন্সিলের (বিএডিসি) চেয়ারম্যান মো. সায়েদুল ইসলাম এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুল মুঈদ।