ঐতিহাসিক শোলাকিয়ায় ১৯৫তম ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত

Looks like you've blocked notifications!
রোববার কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ। ছবি : সংগৃহীত

দেশের সর্ববৃহৎ ঈদগাহ কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঈদুল আজহার জামাত। আজ রোববার সকাল ৯টায় শুরু হওয়া এবারের জামাতটি ছিল ঈদুল আজহার ১৯৫তম ঈদের জামাত।

এবারের ঈদের জামাতে ইমামতি করেন কিশোরগঞ্জ মারকাজ মসজিদের খতিব মাওলানা হিফজুর রহমান খান। নামাজ শেষে বাংলাদেশ ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। ঈদের জামাতে কয়েক হাজার মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন। 

জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার, প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিক, পেশাজীবী নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের বিপুল মানুষ জামাতে অংশগ্রহণ করেন।

শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. শামীম আলম বলেন, ‘সুষ্ঠুভাবে জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে, এমনিতেই সব সময় কোরবানির আনুষ্ঠানিকতার কারণে দূর-দূরান্তের মানুষ না আসায় ঈদুল আজহার জামাতে মুসল্লি কম হয়ে থাকে।’ তবে, মুসল্লির আনুমানিক সংখ্যা তিনি বলতে চাননি। তিনি বলেন, ‘আপনারা তো দেখেছেনই।’

জামাতে অংশগ্রহণ করতে আজ সকাল থেকেই মুসল্লিদের আগমন শুরু হয় জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তেু নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত শোলাকিয়া ঈদগাহের উদ্দেশে। ঈদের জামাতে দূর-দূরান্ত থেকে মুসল্লিদের অংশগ্রহণের সুবিধায় ‘শোলাকিয়া স্পেশাল’ নামের দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয় সরকারিভাবে। এর একটি ট্রেন ভোর পৌনে ৬টায় ময়মনসিংহ থেকে এবং অপর ট্রেনটি সকাল ৬টায় ভৈরব থেকে ছেড়ে মুসল্লিদের নিয়ে কিশোরগঞ্জ শোলাকিয়া মাঠের উদ্দেশে ছেড়ে আসে।

পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ বলেন, ‘সুষ্ঠুভাবে জামাত অনুষ্ঠানের জন্য জেলা প্রশাসন ও ঈদগাহ কমিটির পক্ষ থেকে গ্রহন করা ব্যাপক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে মাঠে নিরাপত্তার জন্য বিপুল পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়েন ছিল। নিরাপত্তার স্বার্থে মাঠে আর্চওয়ে, ওয়াচ টাওয়ার, ড্রোন ক্যামেরা, ভিডিও ক্যামেরা, বাইনোকোলার, সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

মসনদ-ই-আলা ঈশা খাঁর ষষ্ঠ বংশধর দেওয়ান হজরত খান বাহাদুর কিশোরগঞ্জের জমিদারী প্রতিষ্ঠার পর ১৮২৮ সালে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় সাত একর জমির ওপর ঈদগাহ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথম অনুষ্ঠিত জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন বলে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখি মাঠ’। সেখান থেকে উচ্চারণের বিবর্তনে পরিণত হয়ে নাম ধারণ করেছে আজকের শোলাকিয়া মাঠে। বিশাল এ মাঠে মোট কাতার রয়েছে ২৬৫টি। প্রতি কাতারে পাঁচ শতাধিক মুসল্লি নামাজে অংশগ্রহণ করতে পারেন।

এ ছাড়া কিশোরগঞ্জের অন্য সব মসজিদেও শান্তিপূর্ণভাবে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।