ওয়াসার এমডিকে নিয়োগের বৈধতা রিট খারিজ
ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে প্রকৌশলী তাকসিম এ খানকে নিয়োগ দিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো প্রস্তাব ও নিয়োগ প্রক্রিয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ রোববার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তানভীর আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর উস সাদিক।
এর আগে গত ১৪ অক্টোবর শুনানি শেষে আজ রায়ের জন্য দিন ধার্য রাখেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এক বাসিন্দা গত ২৪ সেপ্টেম্বর সংশ্লিষ্ট ওই রিট করেন। এরপর রিট আবেদনকারী পক্ষের সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট এক সপ্তাহ শুনানি মুলতবি করেন। তাকসিমকে ওয়াসার এমডি হিসেবে নিয়োগের প্রস্তাবে ১ অক্টোবর অনুমোদন দেওয়া হয়। এ অবস্থায় নিয়োগ প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে সম্পূরক আবেদন দেয় রিটকারী পক্ষ। আজ এসব বিষয়ের ওপর শুনানি হয়।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা ওয়াসার সচিব প্রকৌশলী শারমিন হক আমীর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ওয়াসা বোর্ডের ৯৭তম বোর্ড সভা আহ্বান করা হয়, যা ১৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। সভার আলোচ্য ছিল ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে প্রকৌশলী তাকসিম এ খানকে তিন বছরের জন্য নিয়োগের প্রস্তাব স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রেরণ।
ওই বিষয় নিয়ে ‘ওয়াসার এমডি থাকছেন তাকসিমই’ ও ‘ঢাকা ওয়াসার এমডি তাকসিমের মেয়াদ আরো ৩ বছর বাড়ছে’ শিরোনামে গত ১৯ সেপ্টেম্বর গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন যুক্ত করে নিয়োগ প্রস্তাবের বৈধতা নিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা খন্দকার মঞ্জুর মোরশেদ রিট করেন। খন্দকার মঞ্জুর মোরশেদ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী।
ওয়াসার এমডি হিসেবে তাকসিম এ খানকে নিয়োগের অনুমোদনের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ঢাকা ওয়াসা বোর্ডের ১৯ সেপ্টেম্বরে প্রস্তাব-সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত কেন বেআইনি ঘোষণা হবে না—এ বিষয়ে রিটে রুল চাওয়া হয়। ১৯ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো নিয়োগের প্রস্তাব-সংক্রান্ত বোর্ডের সিদ্ধান্তের কার্যক্রমও স্থগিত চাওয়া হয় রিটে।
সম্পূরক আবেদনে নিয়োগ প্রস্তাবে ১ অক্টোবর দেওয়া অনুমোদনের কার্যক্রম স্থগিত চাওয়া হয়। স্থানীয় সরকার সচিব, অতিরিক্ত সচিব (পানি সরবরাহ শাখা), ঢাকা ওয়াসা ও তার সচিবকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
রিটে বলা হয়, সংবিধানের ২৯(১) অনুচ্ছেদ অনুসারে যেকোনো সরকারি পদে সমান সুযোগ থাকতে হবে। কিন্তু এখানে সমান সুযোগ নিশ্চিত হচ্ছে না। একজনকে বারবার নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। ওয়াসার আইনে অনুসারে কোনো সভা আহ্বান করতে হলে তা চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান করবেন। অথচ গত ১১ সেপ্টেম্বর ওয়াসার চেয়ারম্যান মারা গেছেন। এমনকি এখানে কোনো ভাইস চেয়ারম্যানও নেই। তাই ওই বোর্ড সভা আহ্বান করা আইনসম্মত হয়নি।
ওয়াসার ২০১০ সালের চাকরিবিধি অনুসারে সরকার সরাসরি এমডির নিয়োগ দিতে পারবে। এ ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপন দেওয়া ও যাচাই-বাছাই কমিটি বাধ্যতামূলক, যা এ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে না—এসব যুক্তিতে রিটটি করা হয়।