কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বছরের শেষ সূর্যাস্ত দেখলেন পর্যটকরা
বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের পশ্চিম আকাশে লাল বৃত্ত ধারণ করল সূর্য। প্রকৃতিতে তখন একটি বছর পাড়ি দেওয়ার নীরবতা। পাখিরা ফিরছিল ঘরে। এমন এক মুহূর্তে নতুনের আহ্বানে পুরাতন লাল বৃত্তের সূর্যকে বিদায় জানাতে উত্তাল সমুদ্র সৈকতে সমবেত হন লাখো মানুষ। উপভোগ করেন বছরের শেষ সূর্যাস্ত। পাশাপাশি থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে শুরু হয় পর্যটকদের উল্লাস।
যদিও এবার সৈকতে কোনো উৎসব-আয়োজনের ব্যবস্থা নেই। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিষিদ্ধ আতশবাজিও। স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় ও পর্যটকদের নিরাপত্তায় নেওয়া হয়েছে কয়েকস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এরই মধ্যে হিমেল হাওয়ায় শিশির ভেজা পড়ন্ত বিকেলে সৈকতে জড়ো হয় লাখো পর্যটক। তারা নতুন বছরের ছোঁয়ায় জেগে ওঠার অদম্য প্রত্যয়ে ঘুরে বেড়ায় মনের আনন্দে।
পর্যটন সংশ্লিষ্টদের দেওয়া তথ্যমতে, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের কারণে অনেকের কাছেই প্রিয় পর্যটন শহর কক্সবাজার। সমুদ্র সৈকতের লোনা জলে গা ভাসানো আর বালুকাবেলায় দাঁড়িয়ে বছরের শেষ সূর্যাস্ত দেখা ও নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রতি বছর এ দিনে পর্যটকের সমাগম ঘটে। ২০২২ সালটি অর্থনৈতিক মন্দায় কাটলেও ব্যতিক্রম হয়নি এবারও।
জানা গেছে, কক্সবাজারে পাঁচ শতাধিক হোটেল, মোটেল ও গেস্ট হাউজ পর্যটকে ঠাসা। পর্যটকরা জানান, ২০২২ সালের সব দুঃসময়ের স্মৃতি ধুয়ে মুছে ২০২৩ সালের নতুন পৃথিবী দেখার প্রত্যাশায় সৈকতে আসা। নতুন বছর সবার জন্য শান্তির বাড়তা নিয়ে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।
কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্টহাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার জানান, কক্সবাজারে দেড় লাখের বেশি পর্যটক ধারণ ক্ষমতা রয়েছে। থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে উন্মুক্ত কোনো অনুষ্ঠান না থাকলেও তারকামানের হোটেল-মোটেলগুলোতে সাজসজ্জার পাশাপাশি কনসার্ট ও রুম বুকিংয়ে বিশেষ ছাড়সহ নানা আয়োজন রয়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান জানান, ভ্রমণে আসা পর্যটকরা যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে সর্বোচ্চ বিনোদন উপভোগ করতে পারে, সেজন্য সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সমুদ্র সৈকতসহ পর্যটন স্পটগুলো নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা রয়েছে। এ ছাড়াও কন্ট্রোল রুম, মেডিকেল টিম, পুলিশ ও কুইক রেসপন্স টিম সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রয়েছে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, সমুদ্রে গোসল করতে নামা পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য লাইফ গার্ডসহ বিচকর্মীরা দায়িত্ব পালন করছে। তবে, ১২০ কিলোমিটারের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের কোথাও কনসার্ট, নাচগান বা আতশবাজির আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা আছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. আবু সুফিয়ান জানান, সরকারি নির্দেশনা মতে সৈকতের উন্মুক্ত স্থানে থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে কোনো অনুষ্ঠানের অনুমতি নেই। ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরদিন ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে হৈ-হুল্লোড়ও নিষিদ্ধ। তবে, হোটেল কর্তৃপক্ষ তাদের অতিথিদের জন্য ইনডোরে নববর্ষ উদযাপনের আয়োজনে অনুমতি রয়েছে।