করোনাভাইরাসে আক্রান্ত দুই শিশুর বয়স ১০ বছরের নিচে
বাংলাদেশে আরো তিনজন নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এদের ভেতরে একজন নারী ও দুই শিশু। এ দুই শিশুর বয়স ১০ বছরের নিচে বলে জানিয়েছেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। আজ সোমবার রাজধানীর মহাখালীতে আইইডিসিআরের সভাকক্ষে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিনজনের মধ্যে একজন নারী আর দুই শিশু। দুই শিশুরই বয়স ১০ বছরের নিচে। শিশু দুটির একটি ছেলে, আরেকটি মেয়ে। তবে এদের ভেতরের সম্পর্কের কথা আমি বলছি না। এ ছাড়া আরো দুজন করোনা আক্রান্ত রোগী আছেন। তারা দুজনই পুরুষ। এ দুজন পুরুষের মধ্যে একজন পুরুষের পরিবারের সদস্য নতুন আক্রান্ত রোগীরা।’
সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত আটজনের ভেতরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পেয়েছি। এর মধ্যে তিনজনের ক্ষেত্রে পরপর দুবার পরীক্ষা করার পর নেগেটিভ আসে। ফলে তাদের আমরা ছেড়ে দিয়েছি। তারা বাড়ি চলে গেছে। তাদের মধ্যে এখন আর সংক্রমণ নেই, নেই অসুস্থতাও।’
ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘একজন পুরুষ রোগীর পরিবারের সদস্যদের কন্ট্রাক্ট রেসিং করতে গিয়ে সদস্যদের মধ্যে আমরা লক্ষণ-উপসর্গ পেয়েছিলাম। পরীক্ষা করে দেখা গেছে, তাদের ভেতরে করোনার উপস্থিতি রয়েছে। তার ভিত্তিতেই আমরা এখন বলছি, নমুনা পরীক্ষার পর গতকাল বাংলাদেশে আরো তিনজনের মধ্যে নমুনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।’
সেব্রিনা ফ্লোরা আরো বলেন, ‘বিদেশ থেকে আসা প্রবাসীরা যেন পরিবার থেকেও দূরত্ব বজায় রাখে, সেই অনুরোধ আমরা করছি। আমরা যেভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করছি, তাতে করে হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে পারব। কিন্তু এখানে পরিবারের ভূমিকা নিতে হবে। পরিবার থেকে যদি সেভাবে সহযোগিতা না পায়, তাহলে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে যেতে হবে। যে তিনজনকে আমরা নমুনা পরীক্ষা করে শনাক্ত করেছি, তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তাদের লক্ষণ উপসর্গও ভালো। কিন্তু তাদের কাছ থেকে যাতে সংক্রমণ ছড়িয়ে না পড়ে, সে জন্য তাদের আমরা আইসোলেশনে রেখেছি।’
আইইডিসিআরের পরিচালক বলেন, ‘গত ১৪ ঘণ্টায় আমাদের আইইডিসিআরের হটলাইনে কল পেয়েছি তিন হাজার ৭৬৯টি। এর মধ্যে তিন হাজার ৭২২টি কোভিড-১৯ সংক্রান্ত। সেবা গ্রহণের জন্য এখানে এসেছেন ২১ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেছি ১০ জনের। এখন পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৪১ জনের। আইসোলেশনে আছেন আরো ১০ জন। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন চারজন। তাদের কোয়ারেন্টিনের সময় এখনো শেষ হয়নি বলে আমরা তাদের এখনো ছাড়িনি। হোম কোয়ারেন্টিনে কতজন আছেন, সে তথ্য আমরা দিতে চাচ্ছি না। কারণ এ তথ্য নিয়ে মানুষের ভেতরে এক ধরনের বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।’
এর আগে গতকাল রোববার সংবাদ সম্মেলনে সেব্রিনা ফ্লোরা বলেছিলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় আমরা দুজনের মধ্যে এই ভাইরাসের উপস্থিতি পেয়েছি। এই দুজনের ভেতরে একজনের বয়স ২৯ বছর। তিনি পুরুষ। আর একজনের বয়স ৪০ বছরের বেশি। তিনিও পুরুষ। তাঁর ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। একজন এসেছিলেন জার্মানি থেকে। আর একজন ইতালি থেকে এসেছেন। দুজন রোগীই ইমপোর্টেড। দুজনেরই জ্বর ও কাশি ছিল। তাদের হাসপাতালে রেখেছি। এই মুহূর্তে তাদের শারীরিক অবস্থা ভালো আছে।’