‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সরকার প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েছে’
নভেল করোনাভাইরাসজনিত বিরাজমান পরিস্থিতিতে সরকার আগামী সোমবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য সারা দেশে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি জানান, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় সরকার এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।
ওবায়দুল কাদের আজ শনিবার সকালে তাঁর সরকারি বাসভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগামী সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে এক সপ্তাহের জন্য সারা দেশে সরকার লকডাউন ঘোষণা করছে। শিল্প কলকারখানা শর্তসাপেক্ষে চালু থাকতে পারে। এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বিস্তারিত জানাবে।’
এদিকে এক ভিডিও বার্তায় জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, ‘দ্রুত বেড়ে যাওয়া করোনার সংক্রমণ রোধকল্পে সরকার দুই থেকে তিন দিনের মধ্যেই সারা দেশে এক সপ্তাহের জন্য লকডাউনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে লকডাউন চলাকালে শুধু জরুরি সেবা দেয়, সে ধরনের প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে। আর শিল্প কলকারখানা খোলা থাকবে, যাতে করে শ্রমিকেরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং বিভিন্ন শিফটিং ডিউটির মাধমে তাঁরা কলকারখানায় কাজ করতে পারেন।’
এদিকে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং মাস্ক পরা জরুরি কর্তব্য বলে মনে করে সেগুলো পালন করার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সরকার এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে, কিন্তু এখনও অনেকেই মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধির প্রতি অনিহা দেখাচ্ছে, যা প্রকারান্তরে ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ে আসতে পারে। নিজেদের সুরক্ষায় সবাই সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করাই এখন মূল কাজ।’
এ ছাড়া ওবায়দুল কাদের মন্তব্য করেছেন- বিএনপি যে নেতিবাচক ভাইরাসে আক্রান্ত তা করোনার চেয়েও ভয়াবহ। তিনি বলেন, ‘করোনার মহামারিতে বিএনপি জনগণের পাশে না দাঁড়িয়ে ঘরে বসে মিডিয়ায় ঝড় তোলা, আর সরকারের অন্ধ সমালোচনা ও মিথ্যাচারই করোনাকালে বিএনপির সফলতা। তারা সরকারের কোনো উদ্যোগ চোখে দেখে না।’
একবার লকডাউন নিয়ে অপপ্রচার, আবার করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে মিথ্যাচার, কখনও কখনও সরকারের ব্যর্থতা খোঁজা বিএনপির রোজনামচা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হয়েও দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ন্যূনতম মূল্যবোধও তারা হারিয়ে ফেলেছে।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, জনগণের সম্পদ বিনষ্ট আর নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে বিএনপি এবং তার সহযোগীরা যে তাণ্ডবলীলা চালিয়েছে তার জন্য বিএনপিকেই জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। আন্দোলনের নামে জনগণের ওপর প্রতিশোধ নেওয়াই এখন বিএনপির কৌশল।
এ ছাড়া রমজানে অহেতুক মূল্য বৃদ্ধি ও মজুদদারিতা নিয়ন্ত্রণে সরকার সতর্ক রয়েছে জানিয়ে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘রমজান এলেই এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বাড়িয়ে দেয়, যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এরই মধ্যে সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, বাজার অস্থির করার কোনো অপপ্রয়াস সরকার মেনে নেবে না। কোনো ধরনের সিন্ডিকেটের কাছে সরকার বাজার ব্যবস্থাকে জিম্মি হতে দেবে না বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।