করোনার ভ্যাকসিন আনতে সরকার তৎপর রয়েছে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক আজ সোমবার বলেছেন, করোনার ভ্যাকসিন আনতে সরকার তৎপর রয়েছে। তিনি বলেন, ‘দেশে ভ্যাকসিন আনতে সরকারের কোভিড-১৯ সংক্রান্ত সব শাখাই তৎপর রয়েছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রতিনিয়ত খোঁজ নিচ্ছেন। বিশ্বে ভ্যাকসিন আবিষ্কার এখন আডভান্স লেভেলে আছে। যুক্তরাজ্য, চীন, রাশিয়া, আমেরিকা, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ভ্যাকসিন আবিষ্কারের চূড়ান্ত পর্যায়ে কাজ করছে। এই ভ্যাকসিনগুলোর গুণগত মান যাচাই-বাছাই করেই প্রধানমন্ত্রী সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্তই গ্রহণ করবেন।’
সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ওয়ালটনের সহযোগিতায় তাইওয়ান এক্সটার্নাল ট্রেড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার কর্তৃক কোভিড-১৯ মোকাবিলায় মেডিকেল সামগ্রী হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী মোস্তফা জব্বারও বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে র্যাপিড টেস্ট পরীক্ষা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, করোনায় তিন ধরনের পরীক্ষা বর্তমানে হয়ে থাকে। এগুলো হচ্ছে পিসিআর টেস্ট, অ্যান্টিজেন্ট টেস্ট ও র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট।
‘এর মধ্যে র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট করার ব্যাপারে এই মুহূর্তে কোনো পরিকল্পনা নেওয়া হয়নি। পিসিআর টেস্টের পাশাপাশি অ্যান্টিজেন্ট টেস্ট শুধু সরকারি ল্যাবগুলোতেই করার ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে,’ যোগ করেন মন্ত্রী।
কোভিড মোকাবিলায় সরকারের নানা উদ্যোগ তুলে ধরে মন্ত্রী দাবি করেন, ‘বাংলাদেশ সফলভাবেই কোভিড-১৯ মোকাবিলা করে যাচ্ছে। গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তখন আমাদের পর্যাপ্ত মেডিকেল সামগ্রী ছিল না, যা ছিল তাই দিয়ে আমরা পরিকল্পিতভাবে এ মাহামারি মোকাবিলা শুরু করি।’
জাহিদ মালেক আরো বলেন, ‘দেশের স্পেশালাইজড হাসপাতাল ঘোষণা করে সুচিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এখন হাসপাতালগুলোতে কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা অনেক কম। এ সব হাসপাতালে ৬০-৭০ ভাগ সিট খালি থাকছে। এখন স্পেশালাইজড হাসপাতালের সংখ্যা কমিয়ে সাধারণ চিকিৎসার জন্য খুলে দেওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে।’
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘বাংলাদেশ সীমিত সম্পদ দিয়ে সঠিকভাবেই কোভিড-১৯ মোকাবিলা করছে। এখন প্রয়োজন মানুষের সচেতনতা। এ সচেতনতা সৃষ্টির জন্য দেশের প্রচার মাধ্যমগুলোর গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। শুরু থেকেই দেশের প্রচার মাধ্যমগুলো দায়িত্বশীল ভূমিকা রেখে আসছে। আগামীতেও এ সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলে আমরা আশা করি।’
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ সাধ্যের সবটুকু দিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমরা দেশের ৬৪টি জেলায় বিনা মাশুলে স্বাস্থ্য সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছি। কলসেন্টার ও টেলিমেডিসিন ব্যবস্থায় নিরবচ্ছিন্ন সেবা নিশ্চিত করার সুযোগ সৃষ্টি এবং টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট অব্যাহত রাখার মাধ্যমে জীবনযাত্রা গতিশীল করার চেষ্টা করছি। করোনাকালেও গ্রামের মানুষটি পর্যন্ত উপলব্ধি করছে ডিজিটাল বাংলাদেশ না থাকলে বৈশ্বিক মহামারির এই ক্রান্তিলগ্নে মানুষের জীবনযাত্রা বিপন্ন হতো।
তাইওয়ান এক্সটার্নাল ট্রেড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার এক লাখ সার্জিক্যাল মাস্ক, এক হাজার ৬০০ এ-৯৫ মাস্ক, ২০ হাজার কাপড়ের মাস্ক, ১০ হাজার ফেস শিল্ড, ৫০০ পিপিই, ২০০ গগলস এবং দুই সেট ভেন্টিলেটর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করে।