‘করোনার ভ্যাকসিন বাংলাদেশ বিনামূল্যে এবং সবার আগে পাবে’
বিশ্বে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিস্কৃত হলে বাংলাদেশ তা সবার আগে এবং বিনামূল্যে পাবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল মান্নান।
আজ সোমবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনলাইনে ‘জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির এক বিশেষ সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সচিব।
স্বাস্থ্যসচিব বলেন, ‘বিশ্বে ভ্যাকসিন আবিষ্কার হলে সবার আগে তা বাংলাদেশে আসবে। যুক্তরাজ্য, চীনসহ অনেক দেশই ভ্যাকসিন আবিষ্কারের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। বিশ্বের যেসব দেশের মাথাপিছু আয় চার হাজার ডলারের নিচে সেসব দেশ এই ভ্যাকসিন বিনামূল্যে পাবে।’
‘যেহেতু বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় দুই হাজার মার্কিন ডলারের কাছাকাছি সুতরাং বাংলাদেশে এই ভ্যাকসিন বিনামূল্যেই পেয়ে যাবে,’ যোগ করেন আব্দুল মান্নান।
স্বাস্থ্যসচিব আরো বলেন, ‘ভ্যাকসিন দেশে এলে দেশের অন্তত ৮০ শতাংশ মানুষকে ক্রমান্বয়ে বিতরণের পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। একই সঙ্গে ভ্যাকসিন আনার প্রক্রিয়া ও বিতরণের জন্যও সরকার যথার্থ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’
সভায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে বর্তমানে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের মধ্যে কোনো ধরনের সমন্বয়হীনতা নেই। আমরা সবাই এখন একযোগে দেশ সেবার কাজ করে যাচ্ছি।’
বিএসএমএমইউয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, ‘দেশে বর্তমানে করোনা টেস্টের পরিমাণ কমে গেছে। করোনা মোকাবিলা করতে পরীক্ষার সংখ্যা আরো বৃদ্ধি করতে হবে।’
স্বাচিপ সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান বলেন, ‘কোভিড হাসপাতালে অনেক সংখ্যক বেড খালি পড়ে রয়েছে। রোগীরা কেন ভর্তি হচ্ছে না, সে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে।’
কমিটির সদস্য সচিব মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা জানান, আক্রান্ত ব্যক্তিকে চিহ্নিত করার সঙ্গে সঙ্গেই তাকে পরিবার থেকে আলাদা করে হাসপাতালে আইসোলেশনে রাখা গেলে পরিবারের অন্য সদস্যরা এতে কম আক্রান্ত হবেন।
বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহীউদ্দিন সিএমএসডির পরিচালক ও অন্যান্য মহাপরিচালক পদে কোনো চিকিৎসক কর্মকর্তা রাখা প্রসঙ্গে তাঁর মতামত ব্যক্ত করেন। একই সঙ্গে তিনি হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় আরো শক্ত অবস্থান থাকবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
বিএসএমএমইউয়ের সাবেক উপাচার্য ও নাক-কান-গলা রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত জানান, হাসপাতালগুলোতে নন-কোভিড রোগীদের সেবা দিতে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। দেশের উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে প্রশাসন বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগ, স্কাউটস ও জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে শক্তিশালী টিম গঠন করতে হবে।
সভায় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দেন। টেস্ট সংখ্যা বৃদ্ধি করা, বিমানবন্দরে কাস্টমসে জরুরি চিকিৎসা সামগ্রী প্রবেশে শুল্ক ব্যবস্থা শিথিল করা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে একজন জরুরি ফোকাল পয়েন্ট রাখা এবং সিএমএইচডিতে জরুরি কাজের সহজ ম্যাকানিজম তৈরির ব্যাপারে পরামর্শ দেন অধ্যাপক শহীদুল্লাহ।
সভায় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব সব বক্তাদের কথা শোনেন এবং সভাপতির বক্তব্যে কমিটির সবাইকে আশ্বস্ত করেন যাতে তারা নতুন উদ্যোমে দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে দেশের পাশে থাকেন এবং নিয়মিত পরামর্শ প্রদান করেন।