করোনায় মৃত নারীকে গোসল করাতে এগিয়ে এলেন ইউএনও খালেদা
করোনায় মৃত নারীর লাশ ভয়ে গোছলের অভাবে দাফন করা যাচ্ছিল না। এগিয়ে আসছিল না স্বজনরাও। রাত গভীর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লাশ দাফনে দেখা দিয়েছিল অনিশ্চয়তা। ঘটনাটি শুনে এগিয়ে এলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. খালেদা খাতুন রেখা। ঘটনাটি ঘটেছে পিরোজপুরের কাউখালীতে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কাউখালীর উজিয়ালখান গ্রামের এক নারী গত শুক্রবার দুপুরে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। স্বজনরা লাশ বাড়িতে নিয়ে এলেও করোনার ভয়ে লাশ ধরছে না কেউ। এগিয়ে এলেন না প্রতিবেশীরাও। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাশটি পড়েছিল বাড়িতে। এ রকম একটি সংবাদ ব্যথিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খালেদাকে। ওই দিন রাত তখন ১০টা। লাশের গোসল করাতে উদ্যোগী হন কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. খালেদা খাতুন রেখা। আগে কখনো লাশ গোসলের অভিজ্ঞতা না থাকলেও তাৎক্ষণিক শিখে নিয়েছেন নিয়ম। স্বেচ্ছাসেবী মাহফুজা মিলি এবং শামীমা আক্তারের সহযোগিতায় লাশের গোসল করালেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। গোসল শেষে কাফনের কাপড় পরান। রাত ১২টার দিকে জানাজা শেষে কাউখালীর উজিয়ালখান গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় ওই নারীকে। সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ভাইরাল হয় ঘটনাটি।
কাউখালী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মৃদুল আহম্মেদ সুমন বলেন, ‘করোনায় মৃত নারীর দাফনের ব্যবস্থা করে মানবতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। করোনার শুরু থেকে গর্ব করার মতো মানবিক সব কাজ করে চলেছেন তিনি। তার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খালেদা খাতুন রেখা জানান, তিনি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পান যে বাড়িতে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির লাশ পৌঁছেছে অনেক আগেই। কিন্তু পরিবার বা প্রতিবেশীরা আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে কেউ এগিয়ে আসছেন না। পরে তিনি নিজ উদ্যোগে স্বেচ্ছাসেবকদের সহযোগিতায় লাশ গোসল শেষে দাফন সম্পন্ন করেন। এটি মানুষ হিসেবে আমাদের মানবিক দায়িত্ব। তবে করোনায় কেউ মারা গেলে সংক্রমণের ভয় থাকা ভুল ধারণা। মানুষের সচেতন হওয়া উচিত।’
আমরা এক কঠিন সময় পার করছি বলে মন্তব্য করেন ইউএনও খালেদা।