আদালতে রিমান্ড প্রতিবেদন

করোনা টেস্ট বাবদ ২ কোটির বেশি টাকা হাতিয়ে নেন সাহেদ

Looks like you've blocked notifications!

করোনা টেস্ট জালিয়াতি ও প্রতারণার মামলায় রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

একই মামলায় রিজেন্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজের ১০ দিন ও জনসংযোগ কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম ওরফে তারেক শিবলীর সাত দিন রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।

রিমান্ড শুনানির আগে আদালতে সাহেদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক এস এম গাফফারুল আলম।

আবেদনে বলা হয়, ‘সাহেদ নিজেকে সুধী ও ক্লিন ইমেজের ব্যক্তি বলে দাবি করলেও প্রকৃতপক্ষে সে একজন ধুরন্ধর, অর্থ লিপ্সু ও পাষণ্ড প্রকৃতির লোক। অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার প্রশ্নে তার কাছে মানুষের জীবন-মৃত্যুর কোনো মূল্যই নেই। সে তার সহযোগীদের সহায়তায় কোভিড-১৯ পরীক্ষার রিপোর্ট ও চিকিৎসা উভয় ক্ষেত্রে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। কোনো রোগী যদি প্রতারণার কথা বুঝতে পেরে, প্রতিবাদ করে তবে সে তাদের বিভিন্নভাবে হুমকি দিত। ফলশ্রুতিতে আর কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পেত না।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত রোগীদের নমুনা পরীক্ষার ফর্মে বিনামূল্যে করার কথা উল্লেখ থাকলেও প্রতিটি রোগীর কাছ থেকে আদায় করত তিন হাজার ৫০০ থেকে চার হাজার টাকা। সেই হিসাবে ছয় হাজার রোগীর কাছ থেকে মোট দুই কোটি ১০ লাখ টাকা আদায় করে।

পুলিশ প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতারক সাহেদ চিকিৎসা প্রতারণার মাধ্যমে জাল-জালিয়াতি ও ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করে সরলমতি রোগীদের নিকট থেকে এ বছরের মার্চ হতে প্রায় তিন-চার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে, যা মানিল্ডারিং আইনের পর্যায়ভুক্ত।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘সাহেদ গত ১২ মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান করছে, মর্মে উল্লেখ করলেও প্রকৃতপক্ষে সে পরীক্ষার ফি বাবদ টাকা গ্রহণ করেছে। এ ছাড়া সে গত ১ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিকট এক কোটি ৯৬ লাখ লাখ ২০ হাজার টাকা প্রাপ্তির জন্য বিল দাখিল করেছে।

অনেক ভুক্তভোগী রোগীর কাছ থেকে জানা যায়, রিজেন্ট হাসপাতাল রোগীদের খাওয়া, অক্সিজেন, ওষুধ ও বিভিন্ন মালামাল সরবরাহ করার নামে অর্থ হাতিয়ে নেওয়াসহ বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা করত। এ ছাড়া আসামি সাহেদ করোনা পরীক্ষা না করেই ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করে সংক্রমণ বিস্তার ঘটিয়েছে, তাই আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।

এর আগে আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে আদালতে হাজির করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। শুনানি শেষে প্রতারণার মামলায় রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। একই মামলায় রিজেন্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজের ১০ দিন ও জনসংযোগ কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম ওরফে তারেক শিবলীর সাত দিন রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।