করোনা পরিস্থিতি সামলে রাজনীতির মাঠ এখন সরব

Looks like you've blocked notifications!

করোনাভাইরাসের প্রভাবে প্রায় দেড় বছর স্থবির থাকে দেশের মাঠ পর্যায়ের রাজনীতি। এ সময়ে মাঠপর্যায়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সাংগঠনিক তেমন কোনো কর্মসূচি চোখে পড়েনি। তবে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে দেখা গেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ কয়েকটি দলকে। এখন করোনার সংক্রমণ যতই কমছে, রাজনীতির মাঠ ততই গরম হচ্ছে। 

গত আগস্ট মাসের শুরু থেকে আওয়ামী লীগ অভিযোগ তোলে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার সঙ্গে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান জড়িত। তারা জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচারের দাবি জানায়। বিএনপিও এ বিষয়ে পাল্টা জবাব দেয় ও প্রতিবাদ জানায় রাজপথে।

এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের ভূমিকা, চন্দ্রিমা উদ্যানে থাকা কবরে তাঁর লাশ আছে কি না—এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। 

প্রধানমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের পর থেকে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা এ নিয়ে কথা বলা শুরু করেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হকসহ অনেকে সংসদ ভবন এলাকা থেকে জিয়াউর রহমানের কবর সরিয়ে নেওয়ারও দাবি তোলেন।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলে অন্য নেতারা এ নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান। 

এ দিকে তৃণমূলপর্যায়ে বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশ করছে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠন। 

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, করোনার কারণে কিছুদিন রাজনীতি সীমিত পরিসরে চলেছে। এই সময়টাতে আওয়ামী লীগ সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। এখন পরিস্থিতি একটু ভালো হয়েছে। এই কারণে বিভিন্ন জায়গায় যেখানে সমস্যা আছে, সেখানে কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি করা হচ্ছে।

আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে নিজেকে গোছানোর উদ্যোগ নিয়েছে কিনা জানতে চাইলে হানিফ বলেন, কাউন্সিলের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সংগঠন গুছিয়ে নেয়। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। 

নির্বাচনকে সামনে রেখে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে হানিফ বলেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে নয়, সাংগঠনিক কাঠামো ঠিক রাখার জন্যই মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটিগুলোকে নতুন কাউন্সিলের মাধ্যমে ঠিক করা হচ্ছে।’

মাঠের রাজনীতির বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘বিএনপি সব সময় মাঠেই ছিল৷ করোনার কারণে কিছুদিন সাংগঠনিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল৷ আমরা নিজেরা আলোচনা করেছি। সামনে একটি বিষয়ে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি সেটি হলো তত্ত্বাবধায়ক বা নিরপেক্ষ সরকার গঠনের জন্য আন্দোলন। তবে আমরা অপেক্ষা করব সরকার আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করবে। যদি না করে তাহলে আমরা মাঠপর্যায়ে আন্দোলনে যাব। এ ছাড়াও তৃণমূলকে সংগঠিত করতে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে সভা-সমাবেশ করার বিষয়েও আলোচনা করছি।’ 

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজ্জাম্মেল হক এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা কাজ শুরু করে দিয়েছি। আমরা জেলা, উপজেলাপর্যায়ে যেগুলোতে কাউন্সিল হয়নি, সে সব জেলা, উপজেলাগুলোতে খুব শিগগিরই কাউন্সিলের আয়োজন করা হচ্ছে।’ 

অপরদিকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এনটিভি অনলাইনকে বলেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও জাতীয় পার্টি বিভিন্ন সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া মাঠ পর্যায়ে সব নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আমাদের যেসব কমিটির মেয়াদ শেষ হবে, সেসব কমিটি নতুন করে গঠন করা হবে। এবং জাতীয় নির্বাচনের জন্য সব প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘গত দুই বছরে বিএনপি, আওয়ামী লীগের চেয়ে জাতীয় পার্টি মাঠপর্যায়ে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় ছিল।’