করোনা মোকাবিলায় জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি : ঐক্যফ্রন্ট
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে পাঁচ দফা প্রস্তাব দিয়েছে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। আজ মঙ্গলবার বিরোধী দলীয় জোটের জ্যেষ্ঠ নেতারা এক বিবৃতিতে আরো বলেছেন, সংকীর্ণ ও দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে এ দুর্যোগ মোকাবিলা করা সম্ভব নয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘করোনার ভয়াবহতা ইতোমধ্যেই এক বৈশ্বিক সংকটে পরিণত হয়েছে। এ সংকট ক্রমাগত বাংলাদেশেও বিস্তার লাভ করছে, এ আশঙ্কা এখন সবার মনে। সরকারকে করোনার ঝুঁকিতে পড়া ১৮ কোটি মানুষের জীবন রক্ষাকারী প্রয়োজনীয় স্বাস্থসেবা নিশ্চিত করতে হবে এবং ব্যাপক ভিত্তিতে করোনা টেস্টিং কার্যক্রম সারা দেশে বিস্তৃত করা এখন সর্বাগ্রে প্রয়োজন। কেননা, বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে স্পষ্ট প্রতীয়মান যে, এখন এক অপ্রতিরোধ্য গতিতে করোনার সংক্রমণ বিস্তার লাভ করার পরিস্থিতি আগতপ্রায়।’
জনগণ এ মুহূর্তে চরম অনিশ্চয়তার ভেতর ‘কালাতিপাত’ করছে জানিয়ে বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘গার্মেন্টস সেক্টর খোলা এবং বন্ধ রাখার সমন্বয়হীন আত্মঘাতী সিন্ধান্ত শাটডাউনের কার্যক্রমকে চূড়ান্তভাবে বিপর্যস্ত করায় জনগণের আস্থা বিনষ্ট হয়েছে। বলা বাহুল্য, কোনো সংকীর্ণ ও দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে এ দুর্যোগ মোকাবিলা করা সম্ভব নয়।’
বিবৃতি দাতারা হলেন, গণফেরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহামুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এবং বিকল্প ধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন বেপারী।
ঐক্যফ্রন্টের ৫ দফা প্রস্তাবনা
১. সব রাজনৈতিক দল ও শ্রেণি-পেশার সামাজিক সংগঠন, বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞ এবং দল-মত নির্বিশেষে জাতির সব অঙ্গের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে ‘জাতীয় ঐকমত্য’ গড়ে তোলা।
২. প্রায়-যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বাস্থ্যসেবাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে সর্বদলীয় টাস্কফোর্স গঠন এবং জাতীয়-আঞ্চলিক কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ করা।
৩. করোনা বিস্তার রোধে বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তার জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা।
৪. কর্মহীন শ্রমিক, বিশেষ করে গার্মেন্টসের নারী শ্রমিক, হতদরিদ্র দিনমজুর, প্রান্তিক কৃষক, প্রতিবন্ধী, ছিন্নমূল শিশুসহ অসহায় জনগোষ্ঠীর জন্য অবিলম্বে খাদ্যসামগ্রীর ন্যায্যমূল্যে রেশনিং চালু করা।
৫. সবশেষে, করোনা পরবর্তী আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে ‘আপদকালীন অর্থনৈতিক কাউন্সিল’ গঠন করা।