করোনা সংকটে অসাম্প্রদায়িক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ছাত্রলীগ নেত্রী তিলোত্তমা
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন দেশের অসংখ্য মানুষ। আর এর মধ্যেই শুরু হলো পবিত্র রমজান মাস। কোনোরকমে সেহরি আর ইফতার করে রোজা রাখতে হচ্ছে অনেক মানুষকে। তাই সনাতন ধর্মাবলম্বী হয়েও এসব মানুষের জন্য বাসায় ইফতার বানিয়ে নিজ এলাকা বরিশাল শহরের বিভিন্ন জায়গায় বিতরণ করছেন ছাত্রলীগ নেত্রী তিলোত্তমা শিকদার। প্রথম রমজান থেকে শুরু করা এ ইফতার আয়োজন চলবে শেষ রমজান পর্যন্ত।
তিলোত্তমা শিকদার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হলে। তিনি এই হলের প্রতিষ্ঠাকালীন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। বর্তমানে ছাত্রলীগের উপসাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সদস্য তিনি।
তিলোত্তমা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস ঠেকাতে লকডাউন ঘোষণার তিন থেকে চার দিন আগে আমি আমার শহর বরিশালে আসি। এর পর থেকেই লকডাউন। লকডাউনের কারণে ইচ্ছা থাকলেও ঢাকায় যেতে পারছি না। আমার মতো সবাই লকডাউনে, সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের আয়-রোজগার নেই। লকডাউনে থাকা নিম্ন আয়ের অনেক মানুষ সেহরি না খেয়েই রোজা রাখতে বাধ্য হচ্ছেন।’
তিলোত্তমা শিকদার আরো বলেন, ‘ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা একটা বছর অপেক্ষা করেন রমজান মাসের জন্য। কিন্তু এবার রমজানের আগে থেকেই শুরু হয়ে গেল করোনা। এর প্রভাব পড়েছে রমজানের ওপর। এ অবস্থায় অনেকের বাসায় ইফতারের ব্যবস্থা নেই। অনেকের ঘরে খাবার নেই। তাই প্রথম রমজান থেকে বাসায় ইফতার তৈরি করে রাস্তায় বের হয়েছি। সামাজিক দূরত্ব মেনে রোজাদারদের মধ্যে ইফতার বিতরণ করেছি।’
ছাত্রলীগের এই নেত্রী আরো বলেন, ‘এ ইফতার বিতরণ আমার কাছে জীবনের অন্যতম আনন্দের এক মুহূর্ত মনে হয়েছে। কারণ, এসব মানুষ ইফতার পেয়ে যে খুশি হয়েছেন, তা দেখে আমার মন ভরে গেছে। আমার জীবন ধন্য হয়ে গেছে। আমার মন চায়, এসব মানুষকে আরো দেওয়ার, আরো সহযোগিতা করার। যদি প্রতিদিন এক হাজার মানুষকে ইফতার দিতে পারতাম, আরো বেশি তৃপ্তি পেতাম। মনের তৃপ্তির জন্য এবার পুরো মাস দরিদ্র মানুষের মধ্যে ইফতার বিতরণ করব। ইফতার বিতরণ করতে গিয়ে এমন কিছু মানুষ পেয়েছি, যারা সেহরি না খেয়েই রোজা রেখেছেন। আমি চেষ্টা করছি, আমার আয়োজনটা আরেকটু বড় করার।’
এ ছাড়া লকডাউনের কারণে বিপদে পড়া শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিলোত্তমা শিকদার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাঁরা লকডাউনের কারণে টিউশনি বা বিকল্প আয়ের পথ হারিয়ে বিপদে পড়েছেন, তাঁদের নাম সংগ্রহ করে সহযোগিতা করছেন তিনি।