কলেরার দ্বিতীয় ডোজ শুরু বুধবার থেকে
আগামী বুধবার থেকে ঢাকার পাঁচটি এলাকায় কলেরার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু করতে যাচ্ছে আইসিডিডিআর,বি। আজ সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক ও লাইন ডিরেক্টর (রোগ নিয়ন্ত্রণ প্রোগ্রাম) অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম এই তথ্য জানান।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে শুক্রবার (৫ আগস্ট) ও মঙ্গলবার (৯ আগস্ট, আশুরার দিন) বাদ দিয়ে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে ১০ আগস্ট পর্যন্ত। ঢাকার যাত্রাবাড়ী, সবুজবাগ, দক্ষিণখান, মিরপুর ও মোহাম্মদপুরের প্রথম ডোজ কলেরা টিকা গ্রহণকারী ২৩ লাখ ৬৫ হাজার ৫৮৫ জনকে দ্বিতীয় ডোজ কলেরা টিকা প্রদান করা হবে। যারা ২৬ জুন থেকে ২ জুলাইয়ের মধ্যে প্রথম-ডোজ কলেরা টিকা নিয়েছেন, তারা নিজ নিজ কেন্দ্রে টিকা কার্ড দেখিয়ে দ্বিতীয় ডোজ নিতে পারবেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক ও লাইন ডিরেক্টর (রোগ নিয়ন্ত্রণ প্রোগ্রাম) অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ঢাকার পাঁচটি এলাকার বাসিন্দাদের থেকে কলেরা টিকাদান কার্যক্রমে অভূতপূর্ব সারা পেয়েছি এবং খুব অল্প সময়ে রেকর্ড সংখ্যক অধিবাসীকে টিকা প্রদান করতে পেরেছি। আমরা আশা করবো, যারা প্রথম ডোজ কলেরা টিকা নিয়েছেন, তারা অবশ্যই দ্বিতীয় ডোজ টিকা গ্রহণ করে নিজেদের এ রোগ থেকে সুরক্ষিত করবেন।’
আইসিডিডিআর,বি-র সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ও ইনফেকশাস ডিজিজেস ডিভিশনের ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র ডিরেক্টর ড. ফেরদৌসী কাদরী বলেন, ‘সবার প্রতি অনুরোধ কলেরা টিকা গ্রহণ করার পাশাপাশি নিজেকে ও প্রিয়জনদের অন্যান্য রোগ প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম, যেমন নিরাপদ পানির ব্যবহার, নিরাপদ পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে উৎসাহিত করবেন এবং ডায়রিয়া-সহ অন্যান্য সংক্রামক রোগ থেকে সুরক্ষিত থাকবেন।’
দক্ষিণ কোরিয়ার ইউবায়োলোজিক্স কো. লিমিটেডের তৈরি ইউভিকল প্লাস নামের কলেরার টিকা এক বছর থেকে তদূর্ধ্ব বয়সীদের প্রদান করা হবে। এই টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত। অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং যারা বিগত ১৪ দিনের মধ্যে অন্য কোনও টিকা গ্রহণ করেছে; তারা ছাড়া সবাই এই টিকা গ্রহণ করতে পারবেন। এই টিকা নেওয়ার ১৪ দিনের মধ্যে অন্য কোনও টিকা নেওয়া যাবে না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সার্বিক সহায়তায় আইসিডিডিআর,বি কলেরার টিকাদান কর্মসূচি পরিচালনা করছে। এই কর্মসূচিতে আরও সহায়তা করছে জাতীয় সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ, আন্তর্জাতিক রেডক্রস ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ও এমএসএফ। দ্য ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স, গ্যাভি-র আর্থিক সহায়তায় এই টিকাদান উদ্যোগ পরিচালিত হচ্ছে।
প্রায় ৭০০টি কেন্দ্রের মাধ্যমে এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। কোভিড-১৯ সংক্রান্ত সতর্কতা অবলম্বন করে এসব এলাকার বাসিন্দাদের কলেরার টিকা গ্রহণ করে এ রোগ প্রতিরোধ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেই সঙ্গে টিকাদান কার্যক্রমকে সহায়তা করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।