কারাগারে হলমার্কের জিএমের নারীসঙ্গ, তিন কর্মকর্তা প্রত্যাহার

Looks like you've blocked notifications!
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার। ফাইল ছবি

করোনা মহামারির মধ্যে কারাগারের বন্দিদের সঙ্গে কোনো দর্শনার্থীর সাক্ষাৎ নিষিদ্ধ। তবে তা উপেক্ষা করে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র।

এই কারাগারে বন্দি আছেন আর্থিক খাতের বড় কেলেঙ্কারির প্রতিষ্ঠান হলমার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মাহমুদের ভায়রা ও হলমার্কের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) তুষার আহমদ। সম্প্রতি কারাগারের অভ্যন্তরে এক নারীর সঙ্গে তাঁর একান্তে সময় কাটানোর একটি সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হয়েছে। সেটি এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচিত-সমালোচিত হচ্ছে। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন ও কারা কর্তৃপক্ষ দুটি তদন্ত কমিটি করেছে।

এদিকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ডেপুটি জেলার মোহাম্মদ সাকলাইন, সার্জেন্ট আব্দুল বারী ও সহকারী প্রধান কারারক্ষী খলিলুর রহমানকে প্রত্যাহার করে কারা সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে।

কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোমিনুর রহমান মামুন রাতে তিনজনের প্রত্যাহারের বিষয়টি এনটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোমিনুর আরো বলেন, ‘একইসঙ্গে তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট যেকোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকেও অতি দ্রুতই প্রত্যাহার করা হতে পারে।’

প্রথমে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে ফুটেজটি প্রকাশিত হলে তা নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ওই ফুটেজে দেখা যায়, গত ৬ জানুয়ারি কারাগারে কর্মকর্তাদের কার্যালয় এলাকায় কালো রঙয়ের জামাকাপড় পরে ঘোরাফেরা করছেন হলমার্কের জিএম তুষার আহমদ। এর কিছু পর বাইরে থেকে বেগুনি রঙয়ের সালোয়ার-কামিজ পরিহিত এক নারী সেখানে প্রবেশ করেন।

কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার রত্না রায় ও ডেপুটি জেলার সাকলাইনের কারাগারে অবস্থানকালেই ওই ঘটনা ঘটে। বিষয়টি সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে।

দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে দুই যুবকের সঙ্গে ওই নারী কারাগারের কর্মকর্তাদের কক্ষের দিকে যান। তাকে সেখানে রিসিভ করেন ডেপুটি জেলার সাকলায়েন। ওই নারী কক্ষে প্রবেশ করার পর সেখান থেকে বেরিয়ে যান ডেপুটি জেলার সাকলায়েন। এর প্রায় ১০ মিনিট পর কারাগারে বন্দি তুষার আহমদকে নিয়ে যাওয়া হয়।

গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিএম) আবুল কালাম বলেন, ওই ঘটনায় গত ১২ জানুয়ারি গাজীপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিএম) আবুল কালামকে প্রধান করে গাজীপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাবিবা ফারজানা ও মো. ওয়াসিউজ্জামান চৌধুরীকে নিয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ওই ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে।

এদিকে কারা অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক মো. আবরার হোসেনকে। ২১ জানুয়ারি তাঁকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অন্য দুই সদস্য হলেন কারা অধিদপ্তরের উপসচিব (সুরক্ষা সেবা বিভাগ) মো. আবু সাঈদ মোল্লাহ ও ডিআইজি (ময়মনসিংহ বিভাগ) মো. জাহাঙ্গীর কবির।

অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক মো. আবরার হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ঘটনার তদন্তকালে ওই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা সম্ভব নয়। তদন্ত শেষে বিষয়টি জানানো হবে।’

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘ঘটনাটির তদন্ত চলছে। তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে কোনো মন্তব্য করা যাবে না।’