কালিদাস বড়াল হত্যা : চূড়ান্ত রায়েও চার আসামি খালাস
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কালিদাস বড়াল হত্যা মামলায় চার আসামির খালাসের রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।
গতকাল সোমবার চার আসামিকে খালাস দিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল খারিজ করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন।
আসামি চারজন হলেন আলমগীর সিদ্দিকী, নাছির সিদ্দিকী, স্বপন ও শওকত সিদ্দিকী।
আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনসুরুল হক সিদ্দিকী ও অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১১ ডিসেম্বর হাইকোর্টের এক রায়ে দুই আসামি সাঈদুল ইসলাম ওরফে সাঈদ ফকির ও সাইফুর রহমান ওরফে বাবলু কাজীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। এ ছাড়া নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি ও যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামিসহ মোট ছয়জনকে খালাস দেন।
হাইকোর্টে খালাস পাওয়া আলমগীর সিদ্দিকী, তার ভাই নাছির সিদ্দিকী ও স্বপন (নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত), শওকত সিদ্দিকীর (নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত) বিরুদ্ধে আপিল করার অনুমতি চেয়ে লিভ টু আপিল আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। গতকাল এ আবেদন খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। এতে এ চার আসামির খালাস আদেশ বহাল থাকল। তবে হাইকোর্টে খালাস পাওয়া অপর দুই আসামির বিষয়ে আবেদন করেনি রাষ্ট্রপক্ষ।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০০ সালের ২০ আগস্ট সকালে বাগেরহাট শহরের সাধনা মোড়ে কালিদাস বড়ালকে গুলি করে হত্যার পরের দিন নিহতের স্ত্রী হ্যাপি বড়াল বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে বাগেরহাট মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ওই বছরের ৩১ অক্টোবর বাগেরহাট থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম মামলার ২২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেন। অভিযুক্তদের মধ্যে অছিকার রহমান মারা গেছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ও গণপিটুনিতে আব্দুর রশিদ ওরফে তাপু ওরফে মামুন, জুয়েল শিকদার ওরফে রাসেল, কবির ডাকুয়া ও তুষার মোল্লা নামে চার আসামি নিহত হন।
এ মামলায় বাগেরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালত ২০১৩ সালের ৫ জুন এক রায়ে পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড, তিনজনকে যাবজ্জীবন এবং নয় আসামিকে খালাস দেন। এরপর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির সাজা অনুমোদনের জন্য বাগেরহাট আদালত থেকে হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স পাঠানো হয়। এ ছাড়া কারাবন্দি আসামিরা আপিল করে। অপরদিকে আসামিদের খালাসের বিরুদ্ধে বড়ালের স্ত্রী হ্যাপি বড়াল হাইকোর্টে পৃথক একটি আবেদন করেন।