কালোবাজারে টিসিবিপণ্য : গাজীপুরে গ্রেপ্তার শাহীনের রিমান্ড-শুনানি আজ

Looks like you've blocked notifications!
গাজীপুর বোর্ডবাজারের ব্যবসায়ী শাহীনের গুদাম থেকে গত রোববার জব্দকৃত টিসিবির পণ্য। ছবি : সংগৃহীত

গাজীপুরের কালোবাজারে মিলেছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য। নিম্ন আয়ের পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপণ্য সরবরাহে সরকারি উদ্যোগের প্রথম দিনেই ঘটে এ ঘটনা। এতে হতাশ হন এলাকাবাসী। বোর্ডবাজারে ওঠে নানা গুঞ্জন। যদিও পুলিশ এ অপরাধে শাহীন নামে ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করে। জব্দ করে গুদামজাত মালামাল। গ্রেপ্তার শাহীনের সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করে। সেই আবেদনের শুনানি হবে আজ।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) গাছা থানা পুলিশসূত্র আজ মঙ্গলবার জানায়, গত রোববার রাতে মো. শাহীনকে (৩৩) গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি মহানগরীর পূবাইল থানার হায়দরাবাদ এলাকার বাসিন্দা। পরে গতকাল সোমবার আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠান।

আজ গ্রেপ্তার ব্যবসায়ী শাহীনকে রিমান্ডে নিতে আবেদন করা হবে। সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে।

এলাকাবাসী জানায়, গত রোববার ছিল ভর্তুকি মূল্যে নিম্ম আয়ের এক কোটি পরিবারের মধ্যে টিসিবি পণ্য সরবরাহের সরকারি উদ্যোগের প্রথম দিন। এদিন টিসিবি’র পণ্য বিক্রি করা হলেও নির্ধারিত কার্ডধারী অনেকেই পণ্য না পেয়ে ফিরে যান। তাঁরা পণ্য সরবরাহকারিদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তোলেন।

জিএমপি’র গাছা থানার ওসি (তদন্ত) নন্দ লাল চৌধুরী এনটিভি অনলাইনকে জানান, রোববার রাতে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে জিএমপি’র গাছা থানার পুলিশ সদস্যরা বোর্ড বাজারের কলমেশ্বর এলাকার মহর খান ওয়াকফ এস্টেট মার্কেটে অভিযান চালায়। পুলিশ ওই মার্কেটের ‘মেসার্স মা স্টোর’-এর মালিক শাহীনের ভাড়া করা গুদামে টিসিবির পণ্য অবৈধভাবে গুদামজাত অবস্থায় দেখতে পান।

এ সময় পুলিশ ওই গুদাম থেকে দুই লিটার বোতলের ৪৬ বোতলে ৯২ লিটার সয়াবিন তেল, ৪৮ প্যাকেটে ৮৬ কেজি ৪০০ গ্রাম চিনি, ৪৬ প্যাকেটে ৮২ কেজি ৮০০ গ্রাম মসুরের ডাল জব্ধ করে।

ওই পণ্যের ক্রেতা ও ব্যবসায়ী শাহীনকে এসময় গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় গাছা থানার এসআই মো. নাদির-উজ-জামান বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে থানায় মামলা করেন।

গ্রেপ্তার শাহীনের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, এসব পণ্য জাহাঙ্গীর আলম ও রফিক নামে দুই ব্যক্তি বিক্রি করেছেন। তাঁর কাছে দুই লিটারের প্রতি বোতল সয়াবিন তেল ৩০০ টাকা করে (প্রতি লিটার ১৫০ টাকা দরে), ৬০ টাকা কেজি দরে চিনি ও ৭০ টাকা কেজি দরে মসুর ডাল বিক্রি করা হয়েছে।

আরও কয়েকজন ব্যবসায়ীর কাছেও এসব পণ্য বিক্রি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শাহীন।

জিএমপি’র গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইসমাইল হোসেন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘টিসিবির বেশ কিছু পণ্য উদ্ধার এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত এক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল গ্রেপ্তার শাহীনকে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে গাজীপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে। আজ তার শুনানি হবে।’

গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবুল কালাম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘টিসিবির পণ্য ডিলারের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়। তবে এর তদারকির মূল দায়িত্ব ওয়ার্ড কাউন্সিলরের। কোনো পণ্য অবিক্রিত থাকলে কাউন্সিলের নেতৃত্বে ট্যাগ কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে—অবিক্রিত পণ্য উপস্থিত নিম্ন আয়ের লোকদের মাঝে বিক্রি করে দেওয়া হবে, না কি অবিক্রিত পণ্য অন্য দিন বিক্রি করা হবে।’ 

এ ব্যাপারে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৩৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ আল মামুন মণ্ডলের কাছে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, নির্ধারিত ডিলারের মাধ্যমে নির্ধারিত কার্ডধারীদের মাঝে টিসিবি’র পণ্য বিক্রি করা হয়। এসব পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম হলে তার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ডিলারের, ওয়ার্ড কাউন্সিলরের নয়।