কিট পরীক্ষায় কমিটি গঠন, গণস্বাস্থ্যের কাছে চাহিদা চাইবে কাল
করোনাভাইরাস শনাক্তে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি গণস্বাস্থ্যের কাছে কী পরিমাণ কিট প্রয়োজন, সে ব্যাপারে আগামীকাল তাঁদের চাহিদার কথা জানাবে। এর পরই পরীক্ষা শেষে সরবরাহ করা হবে।
বিএসএমএমইউয়ের ভাইরোলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. শাহীনা তাবাসসুমকে ওই কমিটির প্রধান করা হয়েছে।
এদিকে গণস্বাস্থ্যের উদ্ভাবিত কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আজ রোববার বিকেলে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমাদের কিট পরীক্ষা করতে বিএসএমএমইউ ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। কমিটির সঙ্গে আমাদের প্রতিনিধি আজ রোববার দেখা করেছে। তারা বলেছে, আগামীকাল সোমবার এ কমিটি গণস্বাস্থ্যের কাছে কী পরিমাণ কিট প্রয়োজনীয় এবং দিতে হবে, তাদের চাহিদার কথা জানাবে। এরপরই পরীক্ষা শেষে সরবরাহ করা হবে।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আয়ারল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ আমাদের প্রতিষ্ঠানের উদ্ভাবিত কিট পরীক্ষা করে দেখার আগ্রহের কথা জানিয়েছে। আমি এখনো কাউকে কিট পাঠাইনি। কারণ আমার দেশের প্রতিষ্ঠান বিএসএমএমইউয়ের পরীক্ষার ফলাফলই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তারা হ্যাঁ বললে সব ঠিক আছে। এর আগে কাউকে দিলে পুরো প্রক্রিয়া নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
কিন্তু আমি মনে করি আমার দেশে পরীক্ষামূলক কাজ শেষে মানুষের সেবা করা দরকার। পরে বাইরের দেশের কথা চিন্তা করা যাবে।’
‘তা ছাড়া আগ্রহী দেশগুলোর কাছে কিট পাঠানোর আগে সেগুলোর নমুনা তৈরি করতে হবে। আর তার জন্য সময় এবং প্রয়োজনীয় কাঁচামালও দরকার’, বলেন ডা. জাফরুল্লাহ।
তাঁর মতে, ‘তবে ওই সব দেশ আগ্রহ প্রকাশ করার অর্থ কিট কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।’
জানা গেছে, বিএসএমএমইউয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়ার সঙ্গে গণস্বাস্থ্যের সংশ্লিষ্ট তিন বিজ্ঞানীর বৈঠকের পর গতকাল ছয় সদস্যের কমিটি গঠিত হয়েছে। ওই কমিটির সঙ্গেই পরবর্তী ধাপের করণীয় নিয়ে আজ আবার বিএসএমএমইউয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তিন বিজ্ঞানী ডা. বিজন কুমার শীল, ডা. মুহিব উল্লাহ খন্দকার ও ডা. নিহাদ আদনান এতে উপস্থিত থাকবেন।
করোনাভাইরাস শনাক্তে রোগী বা সন্দেহভাজন ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষার জন্য গণস্বাস্থ্যের উদ্ভাবিত টেস্টিং কিট ‘জিআর কোভিট-১৯ ডট বল্ট হস্তান্তরের জন্য প্রস্তুত বলে গত ২৫ এপ্রিল প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে ওই দিন সরকারের কোনো প্রতিষ্ঠান এটি গ্রহণ করেনি। পরবর্তী সময়ে কিটের ট্রায়াল চালানোর অনুমতির বিষয় নিয়ে ওষুধ প্রশাসন ও গণস্বাস্থ্যের মধ্যে কিছুটা জটিলতা তৈরি হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গত ৩০ এপ্রিল ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ওই কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষার অনুমতি দেয়। অধিদপ্তর থেকে বলা হয়, বিএসএমএমইউ বা আইসিডিডিআর,বি অথবা দুই জায়গায়ই গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কিটের ট্রায়াল কার্যক্রম চালানো যাবে। এরই ধারাবাহিকতায় কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষা করবে বিএসএমএমইউ।