কিশোরগঞ্জে অধ্যক্ষকে হত্যায় ছেলের মৃত্যুদণ্ড, বাবার যাবজ্জীবন

Looks like you've blocked notifications!
কিশোরগঞ্জে মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নূরুল করীম। ছবি : এনটিভি

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আমিনুল হককে হত্যা মামলায় এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং তাঁর বাবাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আবদুর রহিম এ রায় দেন। সেইসঙ্গে দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির প্রত্যেককে দুই লাখ টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

রায়ের সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. মানিক মিয়া পলাতক থাকলেও তাঁর বাবা যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত নূরুল করীম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আসামিদের বাড়ি হোসেনপুর উপজেলার জিনারী গ্রামে।

হত্যার শিকার আমিনুল হকের বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মহিষকুড়া গ্রামে। তিনি মহিষকুড়া সিনিয়র দাখিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী কৌঁসুলি (এপিপি) আবু সাইদ ইমাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার বরাত দিয়ে এপিপি আবু সাইদ ইমাম জানান, ২০০৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর নিহত অধ্যক্ষ আমিনুল হকের ছেলে রক্সি (১৪) প্রাইভেট পড়ে জেলার হোসেনপুর উপজেলার গাবুরগাঁও থেকে বাড়ি ফিরছিল। এ সময় ক্রিকেট খেলা নিয়ে বিরোধের জের ধরে স্থানীয় যুবক মানিক মিয়া রক্সিকে মারধর করে বাড়িতে নিয়ে বেঁধে রাখেন। খবর পেয়ে রক্সির বাবা অধ্যক্ষ আমিনুল হক (৫৪) ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় মানিক ও তাঁর বাবা নূরুল করীম তাঁর ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করেন। একপর্যায়ে ধারালো ছোরা দিয়ে আমিনুল হকের বুকে আঘাত করেন মানিক। গুরুতর আহত আমিনুল হককে প্রথমে জেলা সদরে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর ১৭ ডিসেম্বর অধ্যক্ষ আমিনুল হকের মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় নিহতের ভাই ফজলুল হক বাদী হয়ে নূরুল করীম, মানিক মিয়াসহ চারজনকে আসামি করে হোসেনপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা হোসেনপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিনহাজ উদ্দিন তদন্ত শেষে ২০১০ সালের ১৭ আগস্ট দুজনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. মানিক মিয়া মামলার শুরু থেকেই পলাতক রয়েছেন।

রাষ্ট্রপক্ষে এপিপি আবু সাইদ ইমাম ও এ কে এম মঞ্জুরুল ইসলাম জুয়েল এবং আসামিপক্ষে লুৎফুর রশীদ রানা ও আব্দুর রউফ মামলাটি পরিচালনা করেন।