কিশোরগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা হত্যা : উপজেলা চেয়ারম্যান বরখাস্ত
বীর মুক্তিযোদ্ধা ওমর ফারুক সেলিম হত্যাকাণ্ডের বিচার কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে আসায় কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম রেনুকে চেয়ারম্যান পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
রফিকুল ইসলাম রেনু পাকুন্দিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনি ২০১৯ সালের ২৪ মার্চ পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পাকুন্দিয়া উপজেলায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে দ্বিতীয়বারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
স্থানীয় সরকার শাখা কিশোরগঞ্জের উপপরিচালক মো. আবদুল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপজেলা-২ শাখার উপসচিব মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত আদেশের প্রজ্ঞাপনটি আজ দুপুরে আমাদের অফিসে এসে পৌঁছায়।’
আবদুল্লাহ জানান, প্রজ্ঞাপনে সাময়িক বরখাস্তের কারণ হিসেবে বীর মুক্তিযোদ্ধা ওমর ফারুক সেলিম হত্যার আসামি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম রেনুর অতিরিক্ত দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতে বিচার কার্যক্রম চলার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে আরো উল্লেখ করা হয়, হত্যা মামলার একজন আসামি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে আসীন থাকলে পরিষদের প্রতি জনসাধারণের শ্রদ্ধা ও আস্থা বিঘ্নিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, যা পরিষদ বা রাষ্ট্রের জন্য হানিকর, তথা জনস্বার্থের পরিপন্থী।
১৯৯৯ সালের ১৫ জুন চন্ডিপাশা ইউনিয়নের ষাইটপাশা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ওমর ফারুক সেলিমকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ওমর ফারুকের ছোটভাই খন্দকার একরাম হোসেন বাদী হয়ে মো. রফিকুল ইসলাম রেনুকে প্রধান আসামিসহ তিনজনকে আসামি করে পাকুন্দিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
বাকি দুই আসামি হলেন চন্ডিপাশা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) তৎকালীন চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতি ও তাঁর সহযোগী বোরহান উদ্দিন।
এর আগে গত ২৮ মে রফিকুল ইসলাম রেনুর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা ওমর ফারুক সেলিম হত্যা মামলার একজন আসামিসহ অনিয়ম, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বাক্ষর জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে পৌরসভার মেয়র, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ নয়জন ইউপি চেয়ারম্যান অনাস্থা দিয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে লিখিত আবেদন করেন।
এদিকে, উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম রেনুকে সাময়িক বরখাস্তের খবরে পাকুন্দিয়ায় তাৎক্ষণিক আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করা হয়। পাকুন্দিয়া পৌর সদর ও পুলেরঘাটে পৃথক আনন্দ মিছিল বের করা হয়। নারান্দী ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে মিছিল বের হয়ে থানা গেটের সামনে থেকে ঘুরে একই স্থানে শেষ হয়।
এ সময় বুরুদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা রুবেল, উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি নাজমুল হক দেওয়ান, আওয়ামী লীগ নেতা বিল্লাল হোসেন ও আসাদুজ্জামান ডিলারসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।